ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ (Truth Social)-এ তিনি সম্প্রতি একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে বারাক ওবামাকে (Barack Obama) গ্রেফতার করে কলার ধরে তেনে হিঁচড়ে আনা হচ্ছে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা—”আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়” (No one is above the law)। দ্রুতই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়, যদিও পরে জানা যায় এটি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা তৈরি ভুয়ো ভিডিও। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভিডিওটি নিখুঁতভাবে এডিট করা ‘ডীপফেক’ ক্লিপ, যা সাধারণ চোখে আসল বলে মনে হতে পারে। ভিডিওতে এমনভাবে বারাক ওবামার মুখ ও শরীরের ভাষা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যাতে তা বাস্তব মনে হয়। এই ভিডিওতে দেখা যায় ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সামনে বসে থাকা ওবামাকে এফবিআই এজেন্টরা হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ওবামার এমন অবস্থায় দেখে হাসছেন ট্রাম্প। ভিডিওর শেষে দেখা যায় ওবামা একটি কমলা রংয়ের জাম্পস্যুট পরে গরাদ ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। মূলত জনমানসে বিভ্রান্তি তৈরি এবং রাজনৈতিক হিংসা ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই এটি বানানো হয়েছে বলে অনুমান।
এই AI ভিডিও সামনে আসার কয়েক দিন আগেই ট্রাম্প প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবামার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ‘উচ্চ পর্যায়ের জালিয়াতি’র অভিযোগ আনেন। ট্রাম্পের সেই দাবির পরই আমেরিকার ডিরেক্টর অফ ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স (DNI) অফিস থেকে প্রকাশিত হয়েছে ১০০ পৃষ্ঠারও বেশি একটি গোপন নথি। মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান গ্যাবার্ড কর্তৃক প্রকাশিত এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওবামা প্রশাসনের শীর্ষ পদাধিকারীরা নাকি ২০১৬ সালে গোয়েন্দা তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছিলেন। রিপাবলিকান রাজনীতিক তুলসি গ্যাবার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আমেরিকানরা অবশেষে জানতে পারবে কীভাবে ওবামার প্রশাসনের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা গোয়েন্দা তথ্যকে রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।” ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ রয়েছে, ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বরের প্রেসিডেন্টের দৈনিক ব্রিফিংয়ে (PDB) স্পষ্ট বলা হয়েছিল— রাশিয়ার সাইবার হস্তক্ষেপ মার্কিন নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলেনি।
তবে এই ঘটনার পর ফের উঠে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন। বিশেষ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রযুক্তির এমন প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রযুক্তিবিদ ও মানবাধিকার কর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের একাংশ এই ভিডিওকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচেষ্টা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্য যাচাই নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো বলছে, নির্বাচনী আবহে এমন ভুয়ো ভিডিও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করতে পারে।
হোয়াইট হাউস বা ওবামা শিবির থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে ট্রাম্পের শিবির দাবি করেছে, এটি একটি ‘সাংকেতিক’ ভিডিও মাত্র। তাঁদের যুক্তি, “আইনের চোখে সবাই সমান—এই বার্তা দিতেই এই পোস্ট”। আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা: ঢাকার কলেজে ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জেট
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–