বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর লাগাতার হামলা, হেনস্থা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব গোটা বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যখন রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঝড়, তখন দেশবাঁচাও গণমঞ্চ আরও একবার স্পষ্ট করে দিল— এটা নিছক প্রশাসনিক নিপীড়ন নয়, এটি একটি সুচিন্তিত বাংলা-বিরোধী রাজনৈতিক চক্রান্ত!

রবিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর নেতৃত্বে সরব হল গণমঞ্চ। স্পষ্ট অভিযোগ— বিজেপি ও আরএসএসের মদতে বাংলাভাষীদের নিশানা করে এক ভয়ঙ্কর জাতিগত বিভাজনের খেলা খেলছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখে অকথ্য অত্যাচার চালানো হচ্ছে। কোথাও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চুপিসারে সীমান্ত পার করে পুশব্যাক করা হচ্ছে। যেন বাংলা বললেই গায়ের ছাপ পড়ে “বিদেশি” বলে!

যদিও বাংলার বিজেপি নেতারা অস্বীকার করে চলেছেন যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও বাঙালির ওপর আক্রমণ হয়নি। এর উদাহরণ হল অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁর দাবি একজনও বাঙালির ওপর আক্রমণ হয়নি। এই প্রসঙ্গে সুমন ভট্টাচার্য মিঠুনকে আক্রমণ করে বলেন, যে বা যারা এই সময়ে বাঙালিদের উপর অত্যাচারকে সমর্থন করছেন আসলে তারা আজকের বাংলায় রাজাকার। আর যত তুমি রাজাকার হবে এক সময় তোমায় জগদীপ ধনকড় হতে হবে!

সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-শাসিত রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক। কেউ বললেন কীভাবে পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়, কেউ বা জানালেন তিন-চার দিন ধরে চলা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথা। শুধু মুসলিম নয়, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজনের উপরও চালানো হয়েছে নিপীড়নের ভয়াবহ ইতিহাস।

পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “এই আক্রমণ শুধু পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নয়। এটা শুরু। এরপর সাধারণ বাঙালির উপরও একই আক্রমণ নামিয়ে আনবে বিজেপি। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির উপর এই পরিকল্পিত আগ্রাসন কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিজেপির এজেন্ডা স্পষ্ট— বাংলাকে ভয় দেখিয়ে, দমন করে, মুখ বন্ধ করে দেওয়া।”

গণমঞ্চের দাবি, “বাংলাদেশি চিহ্নিত করার নামে মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাঙালি, বাংলা ভাষা এবং এই মাটির কৃষ্টি-সংস্কৃতি। বিজেপি ও আরএসএস চায় না বাংলা মাথা তুলে বাঁচুক।” বিজেপির এই ফ্যাসিস্ট কৌশলের বিরুদ্ধে এখন রাজপথে নামার ডাক দিয়েছে গণমঞ্চ। বাংলার প্রতিটি মানুষকে সোচ্চার হতে হবে— কারণ আজকে যদি চুপ থাকি, কাল কণ্ঠরোধ হবে গোটা জাতির!

আরও পড়ুন – রোজভ্যালির সঙ্গে ‘অংশীদারিত্বের’ চুক্তি! প্রমাণ তুলে মিঠুনকে চার প্রশ্ন কুণালের

_

_

_
_
_
_
_
_