বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে ভাইরাল হেপাটাইটিস সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে বহরমপুর পৌরসভা ও হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালের (সোমাজিগুড়া) যৌথ উদ্যোগে এক বিশেষ কর্মসূচি আয়োজিত হল বহরমপুর পৌরসভা চত্বরে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যশোদা হাসপাতালের পরামর্শদাতা সার্জিক্যাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ও রোবোটিক সার্জন ডা. জয়ন্ত মুড। তিনি বলেন, হেপাটাইটিস এ, বি, সি ও ই—প্রতিটিই আলাদা পথ ধরে সংক্রমিত হয় এবং লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই টিকাদান, নিরাপদ চিকিৎসা অনুশীলন ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপাটাইটিস বি ও সি রক্তবাহিত; অনিরাপদ রক্ত সঞ্চালন, দূষণমুক্ত নয় এমন চিকিৎসাপদ্ধতি, সূঁচ ভাগাভাগি ও মাতৃগর্ভ-সংক্রমণ এর প্রধান কারণ। অন্য দিকে হেপাটাইটিস এ ও ই মূলত দূষিত জল ও খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়।

ডা. মুড জানান, যশোদা হাসপাতালে উদ্ভাবিত লিভার ও হেপাটাইটিস ক্লিনিক প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণে ফাইব্রোস্ক্যান, জিনোটাইপিং ও ভাইরাল লোড পর্যবেক্ষণের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এ ছাড়া লিভার ক্যান্সার নজরদারি, টিকাদান পরিষেবা, পুষ্টি পরামর্শ ও রোগী‑শিক্ষা কর্মসূচি নিয়মিত চালু রয়েছে।

পৌরসভার চেয়ারম্যান‑সহ নির্বাহী কমিটির বিশিষ্ট সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পৌরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, শহরবাসী‑সহ আশপাশের ব্লকগুলির মানুষকে বিনা মূল্যে হেপাটাইটিস বি টিকাদান ও প্রাথমিক পরীক্ষা সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্কুল‑কলেজে সচেতনতামূলক সেশন আয়োজনের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ক্যাম্পে বহু মানুষের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। স্বেচ্ছাসেবীরা লিফলেট বিতরণ করেন এবং কুইজ ও অংশগ্রহণমূলক আলোচনার মাধ্যমে জনগণকে হেপাটাইটিস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা বোঝান। পৌরসভা ও যশোদা হাসপাতালের এই যৌথ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে স্বাস্থ্য‑বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রতিরোধ, প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও সঠিক চিকিৎসা—এই তিন ক্ষেত্রেই অভিযানে জোর দিলে হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি সম্ভব।
আরও পড়ুন- “রেশন কার্ড” কাহিনীচিত্রে উঠে এল সমাজের এক নির্মম বাস্তব! পোস্টার লঞ্চ কলকাতা প্রেস ক্লাবে

_

_

_
_
_

_

_
_
_