বাণীমন্দির স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম ঘিরে সাংসদ-বিধায়ক তরজা, পদত্যাগ পরিচালন সমিতির সদস্যের

Date:

Share post:

স্কুলে সাংসদ তহবিলের টাকায় স্মার্ট ক্লাস। আর তা নিয়ে সাংসদ ও বিধায়কের বিবাদ তুঙ্গে চুঁচুড়া বাণীমন্দির স্কুলে (School)। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে শুক্রবার স্কুলের পরিচালন সমিতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়।

চুঁচুড়া বাণীমন্দির স্কুলে হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rachana Banerjee) সংসদ তহবিল থেকে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার হঠাৎই পরিদর্শনে রচনা।সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, সাংসদ তহবিলের টাকায় কেন স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি হচ্ছে? কে বরাত পেয়েছে- তা নিয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের (Asit Mujumder) রোষের মুখে পড়েছেন প্রধান শিক্ষিকা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান তৃণমূল সাংসদ। বলেন, “আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। আশ্চর্যজনক ঘটনা। স্মার্ট ক্লাসরুম প্রয়োজন ছিল বাণীমন্দির স্কুল চেয়েছিল। আমি দিয়েছি। আরও দেব।” ক্ষোভ উগড়ে রচনা বলেন, “তৃণমূল (TMC) বিধায়ক শিক্ষিকাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন! শিক্ষিকাদের একটা সম্মান আছে। এটা কখনওই মানা যায় না।” সাংসদ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আগামী দিনেও কাজ করব। স্কুলের উন্নতি করব স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করব। কার কত দম আছে দেখব। এই ঘটনা যাঁকে জানাবার তাঁকে জানাব। দল জানে ওনার গতিবিধি। এর আগেও নানা ঘটনা ঘটেছে। উনি বোধহয় চাইছেন না স্মার্ট ক্লাস রুম হোক। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। আমার সাতজন বিধায়কের একজনই হয়তো দলের বদনাম করছেন ৬ জন দলের কথা ভাবেন। ওনার বয়স হয়েছে মাথা কাজ করছে না।”

বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, “উনি আমার দলের সাংসদ। উনি যেটা বলতে পারেন আমি সেটা পারি না। আমি সাংসদের কথার উপর কোনও কথা বলব না। যা বলার দলকে বলব।” ইতিমধ্যেই দলের উচ্চ নেতৃত্বকে চিঠি লিখে জানানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন বিধায়ক।

এসবের মধ্যেই বাণী মন্দির স্কুলে (School) গিয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। জানান, হুগলি ডি আই, মহকুমা শাসক এবং জেলাশাসককেও পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এলাকায় অসিত মজুমদার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌরীকান্তের আবার অভিযোগ, “বিধায়ককে যেভাবে বদনাম করার চেষ্টা করা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।কারণ ঘটনার দিন আমি বিধায়কের সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম। বিধায়ক কারও সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করেননি।তিনি শুধু জানতে চেয়েছিলেন স্কুল চলাকালীন যে মিস্ত্রিরা কাজ করছে তাঁদের পরিচয় পত্র স্কুলের কাছে রাখা আছে কি না। কারণ এটা মেয়েদের স্কুল কিছু একটা বিপদ হয়ে গেলে তার দায় সরকারের উপর বর্তাবে। স্কুলের এক অভিভাবক বিধায়ককে ফোন করে জানিয়ে ছিলেন, স্কুল চলাকালীন বাইরের লোক এসে কাজ করছে তাই বিধায়ক এসেছিলেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ধরনের মন্তব্য করে থাকতে পারে। এ বিষয়ে সাংসদকে আমি কিছু জানায়নি। বিবেকের তাড়নায় আমি পদত্যাগ করলাম।” এখন এই ঘটনার শেষ কোথায় সেটাই দেখার।

 

spot_img

Related articles

দুর্বিষহ পরিষেবা, প্রতিবাদে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি জাতীয় বাংলা সম্মেলনের

কলকাতা মেট্রো পরিষেবার (Kolkata Metro Service) বেহাল দশার প্রতিবাদে ফের পথে নামল জাতীয় বাংলা সম্মেলন (Jatiyo Bangla Sammelan)।...

গুজরাটে এত দামি ফুচকা! তাতে আবার কম পেয়ে পথ অবরোধ মহিলার

কুড়ি টাকায় কটা ফুচকা পাওয়া যায় মোদির রাজ্য গুজরাটে? ভোদদরার এক মহিলা জানালেন – ৬টি। খুব গায়ে লাগলেও...

কলকাতায় ধোনি, দেবীপক্ষের শুরুতেই তিলোত্তমায় একসঙ্গে তিন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক!

কলকাতার আকাশে বাতাসে পুজোর গন্ধ। উৎসবের মরশুমে কলকাতায়  মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। শুক্রবার বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন...

রাজনৈতিক দলকে ‘না’! বুথের ভিডিও বেসরকারি সংস্থাকে দিল নির্বাচন কমিশন

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন দাবি করেছিল ভোটারদের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনও রাজনৈতিক দলকেই নির্বাচনের দিনের বুথের ভিতরের ভিডিও দেওয়া যাবে...