
দেখা হতে পারে ভেবে কতটা ব্যাকুল / সব কিছু মনে পড়ে যায়…

নজরুল মঞ্চে দেখা হবে। আগে কি দেখা হয়নি? হয়েছে তো। কিন্তু সে তো দেখা-না দেখা! হঠাৎ ‘ধূমকেতু’র আবির্ভাব। একটা বাক্সবন্দি চলচ্চিত্র প্রায় দশ বছর পর মুক্তির অপেক্ষায় ছটফট করছে। আর তাকে ঘিরে বাণিজ্য করার এতটুকু সুযোগ না ছেড়ে প্রযোজক রানা সরকার সিনেমাপ্রেমীদের আবেগ আর নস্টালজিক রোম্যান্টিসিজমকে আমের আঁটির আঁশ থেকে কাই ছাড়ানোর মতো কাঁচিয়ে নিয়ে সরবতের গ্লাসে ভরছেন।

আসবে তো! দেখা হবে? দেখা হলে কী বলবে? চোখে জল, মুখে হাসি? নাকি পেশাদার চাহনি? জল্পনা, জল্পনা আর জল্পনা।

জল্পনা তো হবেই। নায়ক দেব। নায়িকা শুভশ্রী। ছিল জম্পেশ প্রেম। আসল প্রেম। ২০১২ নাগাদ প্রেম চলে গেল গুটি গুটি পায়ে। কিন্তু পরিচালক কৌশিকের ডাকে সাড়া দিয়ে তার তিন বছর বাদে ক্যামেরায় ওরা দুজন স্বামী-স্ত্রী। ছবি শেষ হল, কিন্তু তা বন্দি রয়ে গেল নিউ জেনারেশন ম্যাকবুকের হার্ড ডিস্কের অন্তরালে। এবার তাকে টেনে বের করার খবরে চারিদিকে হইচই। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো উত্তেজনা।

উত্তেজনা কেন? হবেই তো ২০১২ তে প্রেম ভাঙল। ২০১৫ তে ছবি তৈরি। তারপর জল বহুদূর গড়িয়েছে। শুভশ্রী সংসার করে মা হয়েছেন। আর দেব, বিয়ে অথচ না বিয়ে করে আছেন রুক্ষ্মীনির সঙ্গে। একজন অল্প ছুটি নিয়ে ফের অভিনয়ে। সঙ্গে সংসার। অন্যজন অভিনেতা থেকে প্রযোজকও। এতদিন কেউ কাউকে নিয়ে টুঁ শব্দটি করেননি। কিন্তু ছবির ট্রেলার লঞ্চ ঘিরে সোশ্যাল মিডয়ায় দেবের ‘রেডি’তে সাড়া দিয়ে শুভশ্রী ‘রেডি’ বলতেই ‘খ্যাপা’ সিনেমাপ্রেমীদের বুকে তাদ্রিম বোল।

তাদ্রিম বোল বেজেছে, কেন? প্রাক্তন প্রেমিক-প্রেমিকা চোখের সামনে জুটি বেঁধে স্বামী-স্ত্রী। রাঙা চেলি পরে বিয়ে। সেই বিয়ের দৃশ্য শুটের শেষ শটটা দিয়েই নাকি শুভশ্রী ছুটে ভ্যানিটি ভ্যানে বসে কেঁদেছিলেন। তাই? দেব আবার এতদিনকার (!) কথা, ঠিক ঠাওর করতে পারেন না। ঠিক যেন রবি ঠাকুরের কবিতা… আমাদের গেছে যে দিন/একেবারেই কি গেছে/ কিছুই কি নেই বাকি! দেব উত্তর দিয়েছিলেন, শুনতে পায়নি কেউ…রাতের সব তারাই আছে/দিনের আলোর গভীরে।

গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর স্বভাবের মতোই সম্পর্কের গভীরে ঢুকেছেন। বৃদ্ধ দেব। বহু বছর পর নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছে। অথচ নিজের মধ্যে আত্মগোপন। আর শুভশ্রী তাঁর স্বামীকে চিনতেই পারে না। দেবের চোখে কেবল পুরনো স্মৃতির ঝলক। কখনও বিয়ের স্মৃতি, কখনও আবার একসঙ্গে কাটানো সেই সব মুহূর্ত। আর সেই নস্টালজিয়া উস্কে দিয়েছে এই গান… সব কিছু মনে পড়ে যায়। নজরুলমঞ্চে ট্রেলার লঞ্চের সঙ্গে এ গানেরও মুক্তি। ব্যাক গ্রাউন্ডে যখন তা বাজবে, দেব-শুভশ্রী প্রকাশ্যে হাসবেন। আসলে ভিতরে তখন ফল্গুধারা।

–
–

–

–
–
–
–
–