Saturday, November 8, 2025

দেশে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কোনগুলি? জবাব এড়িয়ে লোকসভায় বিভ্রান্তি বাড়াল কেন্দ্র

Date:

নাগরিকত্ব ইস্যুতে চলতি বিতর্কের মধ্যেই সংসদে পাশ কাটানো উত্তরে ধোঁয়াশা আরও বাড়াল মোদি সরকার। লোকসভায় তৃণমূল (TMC) সাংসদ মালা রায়ের (Mala Ray) লিখিত প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট জবাব দিতে পারলেন না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বান্দি সঞ্জয় কুমার। দেখা যাচ্ছে বর্তমানে নাগরিকদের প্রমাণপত্র হিসাবে বিবেচিত হবে কোনগুলি, তা নিয়ে স্পষ্ট জবাব নেই কেন্দ্রের কাছে। বরং কৌশলে বিতর্ক জিইয়ে রাখার চেষ্টা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের লিখিত জবাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, দায়সারা উত্তর স্পষ্টতার চেয়ে বিভ্রান্তিই বেশি তৈরি করেছে। প্রশ্নটি ছিল সরাসরি এবং জনস্বার্থের নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কেন্দ্রের উত্তর পরোক্ষ ও তথ্যগত দিক থেকে অসম্পূর্ণ। সাংসদ মালা রায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, (ক) নির্দিষ্ট কোনও পরিচয়পত্র কি ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়? তাহলে তার বিস্তারিত বিবরণ কী? (খ) আদালতের রায়ে কোন কোন কার্ডকে ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়? এর বিবরণ দিক সরকার। এই প্রশ্নগুলির উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী প্রশ্নের উভয় অংশের জন্যই একটি সাধারণ বিবৃতি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, ২০০৪ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধিত করে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র জারি করতে পারে। এর পদ্ধতি ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব (নাগরিকদের নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র জারি) বিধিমালায় বর্ণিত আছে।

সাংসদের প্রথম প্রশ্নটি ছিল ‘কোনো পরিচয়পত্র’ (যেমন আধার কার্ড, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট ইত্যাদি) বর্তমানে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয় কি না। মন্ত্রী এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে একটি প্রস্তাবিত ‘জাতীয় পরিচয়পত্র’-এর কথা বলেছেন, যা এখনও সর্বজনীনভাবে দেশে চালুই হয়নি। এটি বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তে ভবিষ্যতের একটি সম্ভাব্য পদ্ধতির কথা বলে প্রশ্নটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ারই শামিল।

অন্যদিকে প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশে মালা (Mala Ray) সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চেয়েছিলেন, আদালত কোন কোন কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মন্ত্রীর উত্তরে এই গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিকটি সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। আদালতের রায়ের বিষয়টি সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, কারণ বিভিন্ন সরকারি ও আইনি কার্যক্রমে এই প্রমাণপত্রগুলির বৈধতা নিয়ে প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে। এই প্রসঙ্গে কোনো তথ্য না দিয়ে তার পরিবর্তে সংসদে কার্যত দায় এড়িয়েছে শাহের মন্ত্রক।

এক অসম্পূর্ণ উত্তরে ২০০৩ সালের বিধিমালা এবং ২০০৪ সালের সংশোধিত আইনের তথ্যগত উদ্ধৃতি দিয়েছে কেন্দ্র। এটি একটি সাধারণ প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করে, কিন্তু সাংসদের মূল প্রশ্নগুলি সম্পর্কে সরকারের অবস্থান কী তা জানাতেই পারেননি মন্ত্রী। উল্টে বেড়েছে ধোঁয়াশা। মোদি সরকার স্পষ্ট করেনি যে, সাধারণ মানুষের কাছে থাকা বর্তমান পরিচয়পত্রগুলির আইনি অবস্থান কী। আধার, এপিকের মত এযাবৎ গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্রগুলিকে কি তাহলে বাতিলের তালিকায় ফেলতে চাইছে কেন্দ্র? নাকি রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে পরিকল্পিত অস্থিরতা জিইয়ে রাখতে চায় কেন্দ্র?
আরও খবরক্ষীর গঙ্গায় হড়পা বান! ধুয়ে নিয়ে গেল গোটা গ্রাম, প্রকাশ্যে মারাত্মক ভিডিও

Related articles

আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা, অনুশীলনই বন্ধ রাখল মোহনবাগান

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে মোহনবাগানের(Mohun Bagan) সিনিয়র দলের অনুশীলন। খবর অনুযায়ী, আইএসএল নিয়ে প্রবল অনিশ্চয়তা। টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়...

জন্মদিনে মানুষের ভালবাসা মনে করিয়ে দেয় কর্তব্য: ভিড়ে মিশে গেলেন অভিষেক

সকাল হওয়ার অপেক্ষা নয়। রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় ছিল বাংলার বিপুল জনতা। জননেতা, তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক...

ফলপ্রকাশ SSC একাদশ-দ্বাদশের: ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ, দাবি ব্রাত্যর

বাংলায় কর্মসংস্থানে সদা সচেষ্ট প্রশাসন ও প্রশাসনের সব দফতর। ফের একবার তার প্রমাণ মিলল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসএসসি-র...

দুর্নীতির অভিযোগ তোলা চিকিৎসকই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত! সাসপেন্ড আখতার আলি

আরজিকরের চিকিৎসক তরণীর ধর্ষণ খুনের ঘটনার মধ্যেই আর্থিক দুর্নীতি ঘিরে শোরগোল শুরু হয় আর জি কর হাসপাতালে। গ্রেফতার...
Exit mobile version