ডিভিসির (DVC) লাগাতার জলছাড়ায় দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। বৃষ্টি কমায় হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও আরামবাগের বেশ কিছু প্লাবিত এলাকায় জল নামার সম্ভাবনা দেখা দিলেও, ফের জলছাড়ার পরিমাণ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের। জানা গিয়েছে, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে গত বুধবার থেকে প্রতিনিয়ত ৬০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এর ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে জলস্তর বেড়েছে, নতুন করে জল ঢুকছে নিচু এলাকায়। বহু পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে।

এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “এই বছর ডিভিসি যে পরিমাণ জল ছেড়েছে, তা ২০২৪ সালের তুলনায় ১১ গুণ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি। বর্ষার শেষে এই জলছাড়া কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা ভেবেই আতঙ্কিত প্রশাসন। অভিযোগ, পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ডিভিসি বিপুল পরিমাণ জল ছেড়ে দিচ্ছে, যার ফলে রাজ্য সরকার বন্যা মোকাবিলায় কার্যকর প্রস্তুতি নিতে পারছে না। একাধিক বাঁধ ও চেকড্যামে চাপে দেখা দিয়েছে ফাটলের আশঙ্কা।

কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রকের তথ্যে জানা গিয়েছে, মে থেকে জুলাই পর্যন্ত মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৫০,২৮৭ লক্ষ ঘনমিটার জল ছাড়া হয়েছে, যেখানে গত বছর এই পরিমাণ ছিল মাত্র ৪,৫৩৫ লক্ষ ঘনমিটার। শুধুমাত্র ১৫ জুলাই দিনেই ছাড়া হয়েছে ৪৫ হাজার কিউসেক জল। রাজ্যের দাবি, এই আচমকা জলছাড়া পরিকল্পিত এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ। ফলে দক্ষিণবঙ্গের কৃষিজমি, বাড়িঘর, রাস্তা বিপর্যস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। তবে ডিভিসির তরফে এখনও এই অভিযোগের বিষয়ে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আরও পড়ুন- অফিসারদের সাসপেন্ড: কমিশনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ তৃণমূল! জোড়া তোপ মুখ্যমন্ত্রী-অভিষেকের

_

_

_

_

_

_
_
_
_
_
_