বিরোধী দলের নেতাদের দেশের মানুষের সামনে কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরই তিনি দিতে পারেননি রবিবার, যাতে ঝুলি থেকে বিড়াল না বেরোতে পারে। তবে বিরোধীরা যে ছাড়ার পাত্র নয়, তার ছবি তুলে ধরতেই একযোগে সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী সাংসদ ও নেতারা। সেই সাংবাদিক বৈঠক থেকেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে (Gyanesh Kumar) ১০ প্রশ্ন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra)।

যে সব প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন জ্ঞানেশ কুমার, সেগুলি চোখে আঙুল দিয়ে তুলে ধরলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। সেই সঙ্গে জ্ঞানেশ কুমারের ভুল তুলে ধরে মহুয়ার প্রশ্ন –
প্রশ্ন ১, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে শেষ এসএসআর। এখন বলছেন ২২ লক্ষ লোক যাদের নাম বাদ গিয়েছে তারা মৃত। তার মানে কী আগের তালিকা যার উপর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন হয়েছে তা ভুল, প্রতারণামূলক
প্রশ্ন ২, এফিডেভিট (affidavit) চাইছেন। আমরা আপনার তথ্যে ভুল তুলে ধরছি। তার এফিডেভিট চাইছেন মানে কী আপনার তথ্যকেই ভুলের প্রামাণ্য হিসাবে চাইছেন এফিডেভিটের মধ্যে দিয়ে
প্রশ্ন ৩, যদি আপনাদের উদ্দেশ্য সঠিক থাকত তবে অভিযোগের পাল্টা আপনারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করতে পারতেন না
প্রশ্ন ৪, নির্বাচন কমিশনার (CEC) নিজে বলছেন ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। নির্বাচন কমিশনার আপনি কী এফিডেভিট দিতে পারবেন যে ৬৫ লক্ষ যাদের নাম বাদ গিয়েছে তা সঠিক
প্রশ্ন ৫, নির্বাচন কমিশন রবিবার ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দিয়েছে সেই তালিকা বাদের কারণ দিয়ে প্রকাশ করেছে। আজ করছেন কারণ সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে

প্রশ্ন ৬, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশের কথা বলছেন, ভোটারের তথ্য মেশিন রিডেবল করা যাবে না বলে। সেখানেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলছে, এই বিষয়ে মন্তব্য প্রয়োজন নেই। সুপ্রিম কোর্ট তাহলে কীভাবে বলল মেশিন রিডেবল তথ্য হলে ভোটারের গোপণীয়তা রক্ষিত হবে না
প্রশ্ন ৭, আপনি ৭.২৪ কোটি মানুষের ভোটার তালিকা করানোর দাবি করেছেন। অথচ উত্তর দেননি এর মধ্যে কত মানুষ ভোটার হওয়ার তথ্য পেশ করতে পেরেছেন। এর মধ্যে ২ কোটি মানুষ যদি তথ্য দিতে না পারে তাহলে কি কাল আবার ২ কোটি মানুষের নাম বাদ যাবে
প্রশ্ন ৮, খসড়া তালিকায় মৃত মানুষের নাম রয়েছে। অথচ জীবিত মানুষের নাম বাদ চলে গিয়েছে খসড়া তালিকা থেকে, এটা কীভাবে হয়? এটা তখনই সম্ভব যখন বিএলও-রা নিজেরাই ফর্ম ভরে জমা দেয়, ভোটাররা নয়
প্রশ্ন ৯, বিহার থেকে ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। তার মধ্যে ০.৪ শতাংশ মানুষ অভিযোগ দায়ের করেছে। এই দাবি কী হাস্যকর নয়?
প্রশ্ন ১০, শুধুমাত্র দ্বারভাঙা ও কাইমুর – দুই জেলাতে বিএলও-রা ১০-১২ শতাংশ ভোটারকে সুপারিশ করেইনি। তার অর্থ গোটা বিহার জেলায় ৮০ লক্ষ মানুষ সুপারিশ না থাকার জন্য নির্বিচার যাচাইয়ের মুখে পড়তে চলেছে

আরও পড়ুন: জল জীবন মিশনের বকেয়া কবে: প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাক্ষাতে ১৬ তৃণমূল সাংসদ

সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ দাবি করেন, ভোট দেওয়ার অধিকার সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার৷ আমাদের দেশে গণতন্ত্র বেঁচে আছে নাগরিকদের ভোটদানের মাধ্যমে৷ নির্বাচন কমিশন দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে৷ লোকসভা ও বিধানসভার ভোটের মাঝে কি করে ৭০ লক্ষ লোকের নাম সংযুক্ত হয়েছে ? এই বিষয় নিয়ে নীরব নির্বাচন কমিশন৷ এরা দেশের বিরোধী দলগুলিকে আক্রমণ করেছে৷ যেভাবে রবিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন তার উল্লেখ করে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং দাবি করেন, ওনার নাম জ্ঞানেশ কুমার না হয়ে অজ্ঞানেশ কুমার হওয়া উচিত ছিল।

–

–

–

–

–
