জঙ্গলমহলে হাতির মৃত্যু রুখতে রেল দফতরকে ‘ডিস্ট্রিবিউটেড অ্যাকোস্টিক সেন্সিং’ (ডিএএস) প্রযুক্তি চালুর আবেদন জানাল রাজ্যের বন দফতর। এক মাস আগে ঝাড়গ্রামের বাসতলা স্টেশনের কাছে বরবিল-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় তিনটি হাতি মারা যায়, যার মধ্যে দুটি ছিল শাবক। সেই দুর্ঘটনার পরেই রেল-বন দফতরের যৌথ পরিদর্শনে হাতির চলাচলের সম্ভাবনা বেশি এমন সংবেদনশীল অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়। বন দফতর জানিয়েছে, বিশেষ করে পাঞ্চেত ও রূপনারায়ণ বিভাগকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে দেখা হয়েছে।

বন দফতরের প্রধান বন্যপ্রাণ সংরক্ষক সন্দীপ সুন্দ্রিয়াল বলেন, উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই এই প্রযুক্তির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গেও হাতি রক্ষায় একইভাবে সুফল মিলবে বলে তাঁদের আশা।

পরিসংখ্যান বলছে, গত চার দশকে দক্ষিণবঙ্গে হাতির সংখ্যা প্রায় দশগুণ বেড়েছে। ১৯৮৫ সালে যেখানে মাত্র ২২টি হাতি ছিল, ২০২৫-এ সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৫-এ। বিশেষত খড়গপুর-টাটানগর-রাউরকেলা রেলপথ হাতিদের যাতায়াতের অন্যতম কেন্দ্র। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫টিরও বেশি হাতি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে।

রেল দফতরের তৈরি ডিএএস আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ ব্যবস্থা। এটি রেললাইনের পাশে হাতির উপস্থিতি ও নড়াচড়া শনাক্ত করে চালক, স্টেশন মাস্টার ও কন্ট্রোল রুমকে একসঙ্গে সতর্কবার্তা পাঠায়। ফলে আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সংবেদনশীল এলাকায় অভিজ্ঞ চালক নিয়োগ এবং তাঁদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি, গোধূলি ও ভোরবেলায় হাতির চলাচল বেশি হয় বলে সে সময়ে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন – নির্বাচন কমিশনারের পাল্টা বিরোধীরা: SIR নিয়ে ১০ প্রশ্ন তৃণমূলের

_

_

_

_

_