হাতে আর বেশি সময় নেই, এখন থেকে ঠিক দু’ঘণ্টার মাথায় সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ডের সেমিফাইনাল ম্যাচ খেলতে নামবে ডায়মন্ড হারবার এফসি এবং ইমামি ইস্টবেঙ্গল এফসি (Durand Cup Semi final: DHFC vs EEBFC)। প্রথম দলের কিছু হারাবার ভয় নেই, দ্বিতীয় দলের মাথায় গগনচুম্বি প্রত্যাশার চাপ। যদিও ধারে-ভারে এগিয়ে লাল হলুদ শিবির, কিন্তু অঘটন ঘটাতে যে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেবে DHFC তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। ম্যাচ শুরুর আগে জেনে নেওয়া যাক দু’দলের কর্তারা কী বলছেন –
আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় (সহসভাপতি, DHFC)
প্রথমবার ডুরান্ড কাপ খেলতে নেমেই ডায়মন্ড হারবার সেমিফাইনালে উঠেছে। এটা আমাদের ক্লাবের জন্য বড় সাফল্য। কিন্তু লক্ষ্য আমাদের সবসময় বড় থাকে। তাই ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। তাহলে আই লিগের আগে দলের আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বেড়ে যাবে। সেমিফাইনাল খুব কঠিন হতে যাচ্ছে ডায়মন্ড হারবারের কাছে। ইস্টবেঙ্গল দলে দারুণ ভারসাম্য। ওদের বিদেশি ও স্বদেশি ব্রিগেড শক্তিশালী। কিন্তু ডায়মন্ড হারবারও ভাল দল। আমাদের খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরাটা দিয়েই জেতার চেষ্টা করবে। আমরা যুবভারতীতে মোহনবাগান সমর্থকদের সামনে খেলেছি। হয়তো ভালো খেলিনি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে জামশেদপুরে প্রতিপক্ষের ডেরায় গিয়ে জিতে ফিরেছি। তাই ইস্টবেঙ্গলকেও পরীক্ষার মুখে ফেলবে ডায়মন্ড হারবার।
মানস ভট্টাচার্য (সচিব, DHFC)
ইস্টবেঙ্গল যদি ডার্বি জিতে মনে করে ডায়মন্ড হারবারকে উড়িয়ে দেবে তাহলে ভুল করবে। ওরা বড় দল হলেও DHFC পিছিয়ে নেই। ISL খেলা ফুটবলার দলে রয়েছে। আমাদের লুকা মাজসেনের মতো প্লেয়ার বড় ম্যাচে রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ওদের মিগুয়েল ও ক্রেসপোকে মাঝমাঠে জায়গা দেওয়া যাবে না। বিপিন, এডমুন্ডের উইং প্লে আটকাতে হবে। ডায়মন্ড ডিফেন্সে দিমিদের উদ্দেশ্য করে ফাইনাল পাসের সাপ্লাই লাইন কাটতে হবে। কিবুর কৌশল ও পরিকল্পনায় ইস্টবেঙ্গলকে কঠিন লড়াই দেবে ডায়মন্ড বাহিনী।
দেবব্রত সরকার (শীর্ষকর্তা, ইস্টবেঙ্গল)
ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য বদলাবে, আবার আমাদের ক্লাব স্বমহিমায় ফিরবে, আশাবাদী সদস্য-সমর্থকরা। ডুরান্ডে টানা জয়ে শুরুটা ভাল হয়েছে। ডার্বি জিতেছে দল। কিন্তু সেমিফাইনাল খুব কঠিন হবে। প্রথমত ডার্বির পরের ম্যাচ সবসময় কঠিন হয়। পচা শামুকে পা কাটার ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু DHFC প্রতিপক্ষ হিসেবে বেশ শক্তিশালী। মাত্র কয়েক বছরেই ওরা ভারতীয় ফুটবলে দাপট দেখাচ্ছে। তাই ইস্টবেঙ্গলের জন্য ম্যাচ সহজ হবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই। এক একটা ম্যাচ ধরে এগিয়ে ট্রফি ঘরে তোলা। আপাতত সেমিফাইনাল জেতাই চ্যালেঞ্জ। তবে কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলেরা যে ফুটবল খেলছে তাতে ওরা হতাশ করবে না বলেই মনে করি।
বিকাশ পাঁজি (প্রাক্তন ফুটবলার, ইস্টবেঙ্গল)
ডার্বি জয়ের পর ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস খুব ভাল জায়গায় থাকবে। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে। ডার্বির পরের ম্যাচটাই সাধারণত খুব কঠিন হয়। তাই সতর্ক থেকেই সেমিফাইনালে ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে নামা উচিত ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের। মাত্র তিন বছরের মধ্যে DHFC-র উত্থান চমকে দেওয়ার মতো। ওরা মোহনবাগানের কাছে পাঁচ গোল খাওয়ার পরেও জামশেদপুরে গিয়ে জিতে ফিরেছে। তাই ইস্টবেঙ্গলের জন্য সেমিফাইনাল সহজ হবে না। ডার্বি ভুলে নামতে হবে দিমিদের। ইস্টবেঙ্গলের কাছে ট্রফিই আসল। এক যুগ পর সুপার কাপ এসেছিল। এবার ডুরান্ড জিততে পারলে মরশুমের শুরুতেই অক্সিজেন পেয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল।
–
–
–
–
–