বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে বাংলায় এসে সুনাম। প্রধানমন্ত্রীর (Prime Minister) শুক্রবারের বক্তব্য ‘হতাশার আর্তনাদ’ ছাড়া আর কিছুই নয়, তোপ তৃণমূল কংগ্রেসের। এদিন বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে যেভাবে মিথ্যাচার করেছেন তার পাল্টা কড়া জবাব দিয়েছে তৃণমূল। শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একটার পর একটা ভিডিও দেখিয়ে (হাত পেতে টাকা নিচ্ছে শুভেন্দু অধিকারী) উদাহরণ তুলে ধরে মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মোদির (Narendra Modi) মিথ্যাচারের মুখোশ খুলে দিয়েছেন। দুর্নীতির ইস্যু থেকে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের প্রতি বিদ্বেষ, এসআইআর (SIR), ‘সংবিধান সংশোধনী’ কালা বিল, পরিযায়ী শ্রমিক, দুর্গাপুজো, বাংলার বকেয়া, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি সবক’টি বিষয় তুলে ধরে তৃণমূল মোদি ও তাঁর দল বিজেপিকে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে, বাংলার মানুষ কিছুই ভোলেনি। ভুলবেও না। ২০১৬, ২০২১, ২০২৪-এর মতো ২০২৬ সালেও গোহারা হারবে বিজেপি। বাংলার মানুষের বিপুল জনসমর্থন ও আগের থেকে রেকর্ড সংখ্যক বিধায়ক বাড়িয়ে ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল কংগ্রেস। মোদি-শাহ সহ বিজেপি নেতারা যতবার বাংলায় আসবেন সেই অনুপাতে বাংলায় তৃণমূলের ভোট বাড়বে।

রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প : শুক্রবার যে রেল প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, সেগুলি আসলে রেলমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনা পরিকল্পনা (২০১১) এবং আর্থিক বরাদ্দের ফসল। একটিবারের জন্যও তাঁর নামটুকু পর্যন্ত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি প্রধানমন্ত্রী। বাংলার জন্য এই প্রকল্পগুলি ঠিক করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এদিন ফলকে নাম তুললেন প্রধানমন্ত্রী। তোপ তৃণমূলের।

বাংলাবিরোধী বিজেপি : এদিন টেলিপ্রম্পটারের দিকে তাকিয়ে বাংলা বলেছেন। অথচ সেসময় তাঁর পিছনের সারিতে বসে আছেন তাঁরই দলের নেতা, যিনি বলেছেন, বাংলা কোনও ভাষাই নয়। বাংলা ভাষা হল বাংলাদেশের। তাঁকে মঞ্চে বসিয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। কটাক্ষ শশী পাঁজা ও কুণাল ঘোষের।

হিম্মত থাকলে এক্সপেল করুন : তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগের দিনই বলেছেন, হিমন্ত বিশ্বশ্বর্মা, অজিত পাওয়ার, বাংলার গদ্দার অধিকারী-সহ যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছিল, তদন্ত এড়াতে সবক’টা বিজেপিতে যেতেই সব তদন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ আলো করে বসে থাকে। দেশের সোনার মেয়েদের যে শ্লীলতাহানি করে, সে টিকিট পায় বিজেপির। তাদের ২৪০ জন সাংসদের মধ্যে ৯৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ। মন্ত্রিসভার ক্ষেত্রেও একই ছবি। কোন মুখে প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে কালা কানুন আর দুর্নীতি নিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন? হিম্মত থাকলে আগে এদের দল থেকে একস্পেল করে দেখান! চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের। কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়ছেন মোদি।

আরও পড়ুন: প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

প্রধানমন্ত্রীর অসৌজন্য: আপনি যা যা অভিযোগ করেছেন তার প্রত্যেকটির উত্তর আমাদের কাছে রয়েছে। আপনার কাছে আমাদের যে প্রশ্নগুলি ছিল, একটিরও উত্তর আপনি দিতে পারেননি। কুণালের সংযোজন, যে প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসেছেন তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী, তাঁর তৈরি করা। একবার অন্তত তাঁর নামটা বলা উচিত ছিল, বাংলার ঘরের মেয়ে তিনি। মেট্রো সম্প্রসারণের স্বপ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখেছিলেন। ভেবেছেন, টাকা বরাদ্দ করেছেন আপনারা! এত দেরি করেছেন যে! ভোটের আগে ফলকে নিজেদের নাম লেখাতে এসেছেন। যে মহিলা, যে নারী, বাংলার যে অভিভাবক কাজটি করে গিয়েছেন, এত বড় বড় প্রকল্প, আপনার তো নামটুক অন্তত উচ্চারণ করার সৌজন্য দেখানো উচিত ছিল।

–

–

–

–
