দুর্নীতি নিয়ে বিরাট লম্বা চওড়া দাবি করেছিলেন নেপালের মাওবাদী নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড (Prachanda)। সেই পুষ্প কমল দহালও জেন জি-র বিক্ষোভ থেকে রেহাই পেলেন না। বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী ওলি (K P Sarma Oli) বা তাঁর মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে যখন দুর্নীতি, স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নেপালের যুব সমাজ, তখনই প্রমাণিত নেপালে আদতে স্বচ্ছ গণতন্ত্রের বড়াই করা বামপন্থীরা (Communist) কতটা ‘স্বচ্ছ’। ওলি সরকারের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন মাওবাদী নেতা প্রচণ্ডও (Pushpa Kamal Dahal)। কিন্তু মঙ্গলবার তার বাড়িতেও হামলা হয়। আর এরপরেই স্পষ্ট, গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী বামেদের চেহারা। গলা পর্যন্ত দুর্নীতিতে ডুবে থাকা বাম শাসনকেই এবার উৎখাতের ডাক নেপালে।

বাংলার সীমান্তের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে যুক্ত নেপালে (Nepal) খানিকটা প্রতিবেশী রাজ্যের প্রতিচ্ছবি। বাংলায় ৩৪ বছর ধরে দুর্নীতির যে অট্টালিকা খাঁড়া করেছিল, তা ভেঙে দিয়েছে বাংলার মানুষ। দুর্নীতির ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যেতেই বাংলায় সব রকমভাবে শূন্যে নেমে গিয়েছে বামেরা। প্রতিবেশী দেশ নেপালেও কার্যত তারই প্রতিফলন। তবে যেখানে সেখানে জনগণের মুখ বন্ধ করে দুর্নীতির উপর পর্দা ফেলতে চেষ্টা চালিয়েছিল সেখানকার বামেরা, তা ভাঙতে আগুন জ্বালাতে হয়েছে নেপালের যুবসমাজকে।

অথচ নেপাল থেকে দুর্নীতি তাড়ানোর দাবি করেছিল এই বামেরাই। বামপন্থী মাওবাদী নেতা প্রচণ্ড ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে দাবি করেছিলেন, সরকারের দায়িত্ব দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবরকম প্রতিরোধ গড়ে তোলার। সেখানেই দাবি করেছিলেন, প্রমাণ করতে হবে কমিউনিস্টরাই (Communist) সবথেকে সৎ ও একমাত্র উপযুক্ত। অথচ তাঁর সময়েই দুর্নীতি ইনডেক্সে ৩৪ শতাংশ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি।

পরবর্তীকালে বিরোধী দলনেতার পদে এসেও ওলি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কিন্তু আদতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে নেপালের ক্ষমতায় এসে কে পি শর্মা ওলি বামপন্থী পার্টি অফিস তৈরিতেই দুর্নীতিতে ফেঁসে গিয়েছিলেন। যে বামপন্থীরা নিজেদের সর্বহারার দল বলে ঘোষণা করে, তারই কেন্দ্রীয় কমিটির অফিস তৈরি হয়েছিল দুর্নীতির টাকায়। বছরখানেকের ওলি সরকার চা বাগান থেকে জমি – কোনও দুর্নীতিতেই পিছিয়ে থাকেনি।

আরও পড়ুন: মধ্যরাতে সেনা-জেন জি বৈঠক: কীভাবে ফিরবে গণতন্ত্র, প্রশ্ন নেপালে

স্বাভাবিকভাবেই সেইসব দুর্নীতির কথা যখন যুবনেতা সুদান গুরুং (Sudan Gurung) বা রবি লমিছানে (Rabi Lamichhane), বালেন্দ্র শাহরা (Balendra Shah) তুলে ধরতে শুরু করেন, তখনই মুখবন্ধের খেলায় নামে ওলি সরকার। আর সেখান থেকেই বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো রাজনৈতিক পালাবদলের পথে নেপাল। কার্যত দীর্ঘ কয়েক দশকের বাম দুর্নীতিকে উপড়ে ফেলারই ডাক দিয়েছে নেপালের যুব সমাজ।

–

–

–

–