চা-বাগান শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় উৎসবের ছোঁয়া অনুপস্থিত থাকলেও এবার ছবি কিন্তু অন্যরকম। পুজোর বাদ্যি বাজতেই চা-বাগান শ্রমিকদের জীবনযাত্রায় উৎসবের ছোঁয়া নিয়ে এল ‘উত্তরের দিশারি’ সামাজিক সংস্থা। ধুমধাম করেই নকশালবাড়ি সংলগ্ন মেরি ভিউ চা-বাগান, লোহা সিং ডিভিশন প্রাঙ্গণে “নব আনন্দে জাগো” প্রাক-পুজো উদ্যাপন করা হল।
দিনভর চলা এই কর্মসূচিতে প্রায় ১৩০ জন মহিলা শ্রমিকের হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয়। সকাল থেকেই বাগান এলাকায় ছিল অনাবিল উৎসবের আনন্দ। নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলে নাচ-গান ও স্থানীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
পুজোর আগেই হাতে উপহার পেয়ে এদিন শ্রমিকের চোখেমুখে ফুটে ওঠে অগাধ আনন্দ। কেউ কেউ আবেগে ভেসে বলেন, “আমরা হয়তো নিজেরা কেনাকাটা করতে পারি না। কিন্তু এবছর নতুন কাপড়ে পুজোর দিনগুলো কাটাতে পারব—এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় আনন্দ।” এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টি এস্টেটের ম্যানেজার সুরজিৎ গোস্বামী, এস্টেট কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি সন্দীপ মিশ্র, সমাজকর্মী শ্রী মনোরঞ্জন, এস্টেটের সকল ডিভিশনাল শ্রমিক সংগঠন প্রতিনিধি, উত্তরের দিশারীর পরামর্শদাতা শ্রী তমাল গুহ, কার্যকরী সভাপতি ডঃ অনুপম মুখার্জী, সচিব শ্রী পিনাকী সরকার, আহবায়ক শ্রী দেবায়ন নন্দী ও সকল সদস্যবৃন্দ।
সংগঠনের পরামর্শদাতা তমাল গুহ এই প্রসঙ্গে বলেন, “চা-বাগান শ্রমিকদের জীবন সংগ্রামময়। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো সমাজের দায়িত্ব”। ডঃ মুখার্জী বলেন, “শারদোৎসবের আনন্দ কেবল শহরেই সীমাবদ্ধ নয়। চা-বাগানের প্রতিটি পরিবারও এই আনন্দে সামিল হোক এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সমাজের প্রান্তিক মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
আরও পড়ুন: তন্ত্রসাধনায় নরবলি ঘটনায় ফাঁসির সাজা বাতিল করে বেকসুর খালাস হাইকোর্টের
এস্টেট ম্যানেজার সুরজিৎ গোস্বামী জানিয়েছেন “উত্তরের দিশারির এই কর্মসূচি শুধু পোশাক বিতরণ নয়, বরং শ্রমিকদের মনে একাত্মতার বার্তা জাগিয়েছে। তাঁদের চোখের উচ্ছ্বাসই এই আয়োজনের সাফল্যের প্রতীক।” এস্টেট কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি সন্দীপ মিশ্র জানান, চা-বাগানের শ্রমিকরা দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করেন। তাঁদের জীবনে সামান্য আনন্দ যোগ করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।
–
–
–
–
