স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বিতীয় দফার একাদশ-দ্বাদশের পরীক্ষায় নজর কেড়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার একটি ঘটনা। যেখানে বিবাহিতা চাকরিপ্রার্থীকে নোয়া খুলে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এমনকি সেই পরীক্ষার্থী এই দাবির জেরে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে গিয়েছিলেন, এমনও প্রচার করা হয়েছিল। তবে রবিবার কালনার (Kalna) সেই পরীক্ষাকেন্দ্রে আদতে কী ঘটেছিল, ফাঁস করল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ (Purba Bardhaman District Police)। পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রশাসনের হস্তক্ষেপে যে সেই চাকরিপ্রার্থী নির্বিঘ্নেই পরীক্ষাও দিয়েছিলেন তা স্পষ্ট করা হল পুলিশের তরফে। পুলিশের তথ্য পেশের পরই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তরফে রবিবারের ঘটনার উল্লেখ করে গোটা বিয়টিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করা হয়। বিষয়টি নজরে আসতেই পুলিশ এর তদন্ত করে যা পেয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়। পুলিশের তরফে সত্যি প্রকাশ করে জানানো হয়, রাজ্যের অন্যত্রের মতো বর্ধমানের ওই পরীক্ষাকেন্দ্রের মূল প্রবেশপথে পরীক্ষার্থীদের (SSC jobseekers) চেকিংয়ের দায়িত্বে ছিল একটি বেসরকারি সংস্থা। সেই সংস্থার এক কর্মী এক পরীক্ষার্থিনীকে হলে ঢোকার আগে নোয়া খুলতে বলেন, যেহেতু নোয়াটি ধাতব। পরীক্ষার্থীনী বিষয়টি পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে মিটে যায়, এবং নোয়া পরেই নিরাপদে এবং নির্বিঘ্নে উনি পরীক্ষা দেন।

আদতে যেভাবে নির্বিঘ্নে এসএসসি-র (SSC) দুটি দফার পরীক্ষা হয়েছে দুটি রবিবারে, তাতে বিরোধী ও অশান্তির সৃষ্টিকারী সংগঠনগুলি যে বিরোধিতার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে তা স্পষ্ট এই ধরনের অপপ্রচারেই। সেই সম্পর্কে সতর্ক করে পুলিশের তরফে সতর্ক করা হয়, পুরো বিষয়টিই একটি বিচ্ছিন্ন ভুল-বোঝাবুঝির ঘটনামাত্র। সব ধর্মেরই প্রচলিত আচরণবিধি সরকারের কাছে সমান সম্মানের। তবু, এর সঙ্গে ধর্মকে জড়িয়ে যাঁরা বিভ্রান্তিকর এবং উসকানিমূলক প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রবিবার এই ঘটনার সঙ্গে আরও একাধিক ঘটনাকে জুড়ে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টাও হয়। সেই সম্পর্কেও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, উপরোক্ত ঘটনাটি ছাড়া রাজ্যের কোথাও আর কেউ এ ধরণের কোনও অভিযোগ কর্তৃপক্ষের কাছে করেননি। যদি কারও সঙ্গে এ ধরণের কিছু ঘটে থাকে, স্থানীয় থানায় জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।

আরও পড়ুন: জমি লেনদেনে টাকার খেলা: অসম IAS-এর উপর ধর্মীয় রঙ হিমন্তের

যেভাবে একটি ঘটনাকে ভুল পরিবেশন করে আগেই সংবাদ মাধ্যমে গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থাকে বদনাম করার চেষ্টা হয়, পুলিশের ব্যাখ্যার পরে তা নিয়ে সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ স্পষ্ট দাবি করেন, সারাক্ষণ অপপ্রচারের চেষ্টা চলছে। তার পরে পুলিশকে টুইট করে সবিস্তার জানিয়ে দিতে হবে আদতে কী হয়েছিল। প্রথমেই একটা কিছু রটানো। হাওয়ায় একপ্রস্থ অপপ্রচার হয়ে গেল। তারপর দেখা গেল সেটা অন্য ঘটনা। কেন এই অপপ্রচার, প্রশ্ন কুণালের।

গত রবিবারের SSC পরীক্ষা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিভ্রান্তিকর প্রচার আমাদের নজরে এসেছে। যেখানে অভিযোগ করা হচ্ছে, বর্ধমানের কালনার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে শাঁখা-পলা-নোয়া পরিহিতা পরীক্ষার্থীনীদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। …(১/৫)
— Purba Bardhaman Police (@BurdwanPolice) September 16, 2025
–

–

–

