মহা মিলনের সুরে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, বেঙ্গালুরুর পাল বাড়িতে জমজমাট প্রবাসীদের পুজো

Date:

Share post:

দুর্গা পুজো বিশ্বজনীন। বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালির  একত্রিত হয়ে দুর্গা পুজোর আয়োজন করেন। বর্তমানে কর্মসূত্রে  বেঙ্গালুরুতে বাঙালির সংখ্যা কম নয়। হিন্দুস্থান এরোনটিক এলাকায় পালবাড়ির দুর্গাপুজো প্রবাসী বাঙালিদের কাছে এই মিলন কেন্দ্র। এই বাড়ির পুজো প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কাছে এটি যেন এক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন।

কলকাতায় থেকেই আসেন মৃন্ময়ী মায়ের প্রতিমা, নিয়ম নীতি থেকে উপাচার সব কিছুই হয় তিথি মেনে।মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর রীতি রিওয়াজ। জাঁকজমক ও ঐতিহ্য বজায় রেখেই কলকাতার পুরোহিতরা পুজো করেন। পুজোর স্থান বেঙ্গালুরু হলেও মিষ্টি, হালুয়া থেকে খাওয়া দাওয়ার সব কিছুতেই ষোলোয়ানা বাঙালিয়ানা।শুধু উৎসব নয়, এখানে প্রতিদিনের আড্ডা, গান, আবৃত্তি, নাটকের মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোররা বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। মণ্ডপ যেন হয়ে ওঠে এক অস্থায়ী বঙ্গ সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল।

মহা মিলনের সুরে পালবাড়ির দুর্গোৎসব আজ আর শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। কানাড়া, তামিল ও মারাঠি পরিবারও সমান উৎসাহে অংশ নেয় এই পুজোয়। একদিকে সানাই বাজে, অন্যদিকে অ-বাঙালি অতিথিরা উপভোগ করেন লুচি-আলুর দম আর খিচুড়ি। পুজো পরিণত হয়েছে সাংস্কৃতিক ঐক্যের মঞ্চে।

পাল পরিবারের কর্তা সীতাংশুশেখর পাল বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই বাংলা পড়তে পারে না। কিন্তু তারা যখন এখানে ঢাকের শব্দ শোনে, মায়ের আরাধনা দেখে বা ভোগ খেতে বসে, তখন বুঝতে পারে এটাই তাদের শিকড়।”

পাল বাড়ির  কন্যা রোজি পালের হাত ধরেই এই পুজোর সূচনা। তঁার কথায়,, “আমাদের সময় মেয়েরা দুর্গাপুজোর আয়োজনের বাইরে থাকত। কিন্তু প্রবাসে এসে দেখলাম, এখানে নারীরাই আসল উদ্যোক্তা। রান্না থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সব জায়গায় মেয়েদের অংশগ্রহণেই পুজো প্রাণ পায়।”

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় সবাই একই অঞ্চলের বাসিন্দা। কলকাতা কিংবা বিদেশে থাকা আত্মীয়রা ভিডিও কলে প্রতিমা দর্শন করেন। ঢাক-ঢোল, সানাইয়ের সুর লাইভস্ট্রিম হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বেঙ্গালুরু যেন হয়ে  উঠে একখণ্ড কলকাতা।

আরও পড়ুন :“দেশের সেরা বাংলা, বিশ্ব সেরা বাংলা”, গানের সুরেই মহাষ্টমীর শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

বেঙ্গালুরুর পালবাড়ির দুর্গাপুজো কেবল এক ধর্মীয় উৎসব নয়, প্রবাসে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের প্রতীক। এটি দেখিয়ে দেয়, সময় ও ভৌগোলিক দূরত্ব যতই হোক, দুর্গাপুজো মানেই বাঙালির কাছে ঘর, শিকড় ও একাত্মতার অনুভূতি।

 

spot_img

Related articles

২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়া-সন্ধ্যায় কৃতী সংবর্ধনা ও এডুকেশন হেলথ কার্ড উদ্বোধন

উত্তর কলকাতার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয়া সম্মিলনীকে কেন্দ্র করে রঙিন সাংস্কৃতিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হল সংবর্ধনা ও সমাজসেবামূলক এক...

কলকাতা দর্শন: ডিসেম্বরেই শহর ভ্রমণে নতুন উদ্যোগ! চালু হচ্ছে বিশেষ পর্যটন বাস পরিষেবা

শীতের মৌসুমে কলকাতার পর্যটন শিল্পকে তেজ দিতে নতুন পদক্ষেপ নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। ডিসেম্বরের শুরু থেকে চালু হতে...

কাপড়ের ব্যবসা করে জীবন কাটাচ্ছেন ধর্ষণের দায়ে জেল খাটা বলিউড নায়ক!

বলিউডের (Bollywood) একসময়ের নামকরা হিরো এখন রিয়েল লাইফে জিরো। 'গ্যাংস্টার'-এর মতো সুপারহিট সিনেমায় অভিনয়ের পর ধর্ষণের দায়ে সাত...

ডিসেম্বরেই সম্পন্ন হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া! এসএসসির তালিকা প্রকাশ হতেই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

কারা ডাক পেলেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইন্টারভিউ তালিকায়, এবার সেই নাম প্রকাশ করল এসএসসি। শনিবার ২০ হাজার নামের এক...