দুদিন আগেই ভারতে পা রেখেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। তাঁর বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে সাংবাদিক বৈঠক – সর্বত্র দেশী ও বিদেশী সাংবাদিকদের উপস্থিতি যে চোখে পড়ার মতোই থাকবে, তা ছিল বলাই বাহুল্য। সেখানে সাংবাদিকদের কোনও লিঙ্গভেদ ছিল না। আর সেটাও ছিল প্রত্যাশিত। অথচ তার পরেরদিনই সাংবাদিক বৈঠকের ছবিটা সেই ভারতেই বদলে গেল আফগানিস্তানের (Afghanistan) বিদেশ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে। তিনি তালিবানি শাসন ছেড়ে ভারতে এসে সাংবাদিক বৈঠক (press conference) করলেও সেই সাংবাদিক বৈঠকে জারি থাকল কড়া তালিবানি (Taliban) শাসন। ঢুকতে পারলেন না কোনও মহিলা সাংবাদিক। মোদির সরকার সেই ফতোয়াই মেনে নিল দেশের রাজধানীতে। স্বাভাবিকভাবেই দিল্লির বিজেপি সরকারের এই মেরুদণ্ডহীনতায় সরব তৃণমূল থেকে সব বিরোধীদলগুলি।

ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের (S Jaishankar) সঙ্গে বৈঠকের পরে শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী (foreign minister) আমির খান মুত্তাকি (Amir Khan Muttaqi)। আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে দেশের বা বিদেশের সংবাদ সংস্থাগুলির যে সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনও মহিলা সাংবাদিক ছিলেন না। প্রাথমিকভাবে বর্খা দত্ত-সহ একাধিক ভারতীয় মহিলা সাংবাদিক প্রতিবাদে সরব হন। এই সাংবাদিক বৈঠককে ‘মেল ওনলি’ (male only) বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। ভারতের মাটিতে তালিবান প্রোটোকল মেনে কীভাবে আমির মুত্তাকির দাবি মেনে নিল বিদেশ মন্ত্রক বা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, প্রশ্ন তোলেন তিনি।

How dare our government allow Taliban foreign minister Amir Muttaqi to exclude women journalists & hold a ‘male-only’ news conference on Indian soil with full protocol? How dare @DrSJAishankar agree to this? & why did our emasculated spineless male journos remain in room?
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) October 10, 2025
এক ধাপ এগিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারের এই আচরণকে গ্রহণের অযোগ্য ও কুৎসিত বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ (Sagarika Ghose)। একে ভারতের মোদি সরকারের বিদেশ নীতির ব্য়র্থতা বলে দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে দুর্বল মোদির মিলিজুলি সরকারের (coalition government) আত্মসমর্পণ বলেও দাবি করেন তিনি।

The @narendramodi government again reveals its failure to evolve a foreign policy in which engagement is separated from endorsement. Women journalists being excluded from the #Taliban press conference in Delhi is UNACCEPTABLE and HATEFUL. This is not oh-so-smart “geostrategic…
— Sagarika Ghose (@sagarikaghose) October 11, 2025
দেশের একাধিক মহিলা সাংবাদিক দাবি করেন, শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ রাখা হয়েছিল মহিলা সাংবাদিকদের। সেখানেই বিদেশমন্ত্রককে ভিতু বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে (Saket Gokhale)। তাঁর দাবি, ভারত নিজের মাটিতে তালিবান শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেনি। যে কোনও সভ্য দেশ এই ধরনের মানহানিকর ঘটনা মেনে নিত না। এই ঘটনার জন্য বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের (S Jaishankar) অন্তত মহিলা সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করেন তিনি।

আরও পড়ুন: তালিবান মন্ত্রীর ভারত সফরের সময়ই কাবুলে একাধিক বিস্ফোরণ, নেপথ্যে পাকিস্তান!

Pathetic that the Modi Govt allowed the visiting Taliban Foreign Minister to BAN women journalists from the press conference in Delhi.
Utter cowards in @MEAIndia who can’t stand up against the Taliban’s nonsense in our OWN country.
No self-respecting sovereign country would…
— Saket Gokhale MP (@SaketGokhale) October 11, 2025
এই ঘটায় নিন্দা করেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও (Rahul Gandhi)। তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদি যখন নিজের দেশের মহিলাদের জনসমক্ষে সমর্থন জানাতে পারেন না, তখনই বোঝা যায় তাঁর নারী শক্তির স্লোগান আদতে কতটা ফাঁকা আওয়াজ। যদিও বিরোধীদের সমালোচনার মুখে দেশের গবেষকদের সঙ্গে আফগান বিদেশমন্ত্রীর আলোচনাসভায় মহিলা গবেষকদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায় শনিবার। তবে তাতে দেশের মহিলা সাংবাদিকদের সম্মানহানির ঘটনা কোনওভাবেই লঘু হচ্ছে না বলেই দাবি সাংবাদিক ও রাজনৈতিক মহলের।

Mr. Modi, when you allow the exclusion of women journalists from a public forum, you are telling every woman in India that you are too weak to stand up for them.
In our country, women have the right to equal participation in every space. Your silence in the face of such… https://t.co/FyaxxCteK6
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) October 11, 2025