নারী নিরাপত্তায় কতটা পিছিয়ে যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ তা কেন্দ্রের সরকারের রিপোর্টেই স্পষ্ট। বয়স্ক মহিলা থেকে নাবালিকা কেউ সেখানে সুরক্ষিত নয়। পথে ঘাটে পিশাচের মতো নারী দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহস একদল মানুষ পায় শুধুমাত্র প্রশাসনিক ব্যর্থতায়। একদিকে দুর্বল প্রসাশনিক নিয়ম অন্যদিকে পুলিশের ব্যর্থতায় এবার গণধর্ষণের (gang rape) শিকার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। নাবালিকার (minor girl) আত্মীয়কে মারধর করে দিনেদুপুরে গণধর্ষণের অভিযোগ লক্ষ্ণৌতে (Lucknow)। ঘটনায় চাপে পড়ে দুজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ (Uttarpradesh police)। তবে পুলিশের উপরই পাল্টা গুলি (firing) চালানোর অভিযোগ ধর্ষকদের বিরুদ্ধে।

লক্ষ্ণৌয়ের বনতারা থানা এলাকার এক দলিত নাবালিকা শনিবার দুপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিল। অন্য এক আত্মীয়ের বাইকে যাওয়ার সময় রাস্তার ধারে একটি আমবাগানের পাশে দাঁড়িয়ে তারা কথা বলছিলেন। দলিত নাবালিকা ১৬ বছর বয়সী, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। সেই সময়ে স্থানীয় পাঁচ ব্যক্তি তাদের ঘিরে ধরে। নাবালিকার (minor girl) আত্মীয়কে মারধর করে সেই জায়গাতেই গণধর্ষণ (gang rape) করা হয় নাবালিকাকে। সেই সঙ্গে ভয় দেখানো হয় যেন কোনওভাবে এই ঘটনার কথা সে কাউকে না জানায়।

পরে নাবালিকা ধর্ষণের কথা সঙ্গী আত্মীয়কে জানায়। সেই আত্মীয় পুলিশের দ্বারস্থ হয় অভিযোগ দায়ের করে। সম্প্রতি একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় মুখ পুড়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের (Uttrapradesh police)। দলিত বা নিম্ন বর্গের নারীর উপর অত্যাচারের ঘটনা ঢাকতেও তৎপর হতে দেখা গিয়েছে যোগীরাজ্যের পুলিশকে। তবে লাগাতার বিরোধীদের প্রবল আন্দোলনের মুখে লক্ষ্ণৌয়ের (Lucknow) ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। অপরাধীদের সন্ধানে শুরু হয় তল্লাশি।

বনতারা রেলস্টেশনের কাছে দুই অভিযুক্তের উপস্থিতির খবর পেয়ে তাদের ধরতে গেলে পাল্টা পুলিশের উপর গুলি চালায় ধর্ষকরা। প্রত্যুত্তরে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে আহত হয় এক দুষ্কৃতী। ললিত কাশ্যপ ও মিরাজ নামে দুই অভিযুক্তকে এখনও পর্যন্ত ধরতে পেরেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এখনও অধরা তিন অভিযুক্ত। যতক্ষণ সব অভিযুক্ত ধরা না পড়ছে দলিত (Dalit) পরিবারের উপর থেকেও চাপ কমছে না বলেই দাবি বিরোধীদের।

আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় দুর্গাপুর ধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার ৩, জঙ্গলে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি

লক্ষ্ণৌয়ের ঘটনা যে আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশের ভেঙে পড়া আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি, সেই দাবিই করেন সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) প্রধান অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। তিনি দাবি করেন, বিজেপি সত্য গোপণ করতে চাইছে। তাদের নেতারা মিথ্যা বলছে। সত্যটা হল উত্তরপ্রদেশে দমনপীড়ন, অবিচার আর এই ধরনের গুরুতর ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। লক্ষ্ণৌয়ের ঘটনা তো নতুন নয়। উত্তরপ্রদেশে নারীদের প্রতি অমানবিক ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে কারণ এখানে পুলিশকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।

–

–

–

–