যথা সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে প্রাণ দিতে হত না ২৬ বছরের চিকিৎসককে। নাগরিক পরিষেবা দিতে আসা চিকিৎসকদের কতটা নিরাপত্তাহীনতায় কাটাতে হয় ডবল ইঞ্জিন মহারাষ্ট্রে, তার প্রমাণ মিলেছে সাতারার আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া চিকিৎসকের সুইসাইড নোটে (suicide note)। এই ঘটনায় এবার মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) চিকিৎসকরা সিবিআই অথবা কোনও নিরপেক্ষ সংস্থার হাতে তদন্তের দাবি জানালেন। অন্যদিকে যে পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন নির্যাতিতা (rape victim) চিকিৎসক, সেই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে সাসপেনশনের (suspension) মতো পদক্ষেপেই থেমে গিয়েছে দেবেন্দ্র ফাড়নবিশ (Devendra Fadnavis) প্রশাসন। অপরাধীকে এভাবে ছাড় দেওয়ায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

সাতারার চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে কীভাবে মহারাষ্ট্রে ময়নাতদন্ত (post mortem) থেকে বন্দিদের মেডিক্যাল রিপোর্ট শুধুমাত্র শাসকদলের নেতাদের অঙ্গুলি হেলনে হয়। বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) অপরাধ প্রবণতার শুরু যে রাজনীতিকদের হাত ধরেই, এমনকি তার হাত থেকে যে চিকিৎসার পেশায় থাকা শীর্ষ পদাধিকারীদেরও মুক্তি নেই, সাতারার (Satara) মেডিক্যাল অফিসার নির্যাতিতার বয়ানে স্পষ্ট। এরই প্রতিবাদে শনিবার মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স (MARD) সামিল হয়। মুম্বইয়ের কেইএম হাসপাতালে (KEM Hospital) জরুরি বিভাগ খোলা রেখে কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা।

মহারাষ্ট্রের চিকিৎসকদের দাবি, সাতারার ঘটনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কেউ নির্যাতিতার কথা শোনেনি। কেউ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে প্রাণ দিতে হল। এর থেকে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না। তাঁরা অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে পুলিশের উপর আস্থা না রেখে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থার হাতে তদন্তভার দেওয়া দাবি জানান তাঁরা। শনিবার প্রায় ৮ হাজার চিকিৎস প্রতিবাদে সামিল হন। তাঁদের বক্তব্য, যদি তাঁদের দাবিগুলি অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তবে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন।

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের হাসপাতালে পুলিশ-সাংসদদের ‘রাজ’! আত্মহত্যার আগে চার পাতা লিখলেন চিকিৎসক

বাস্তবে চিকিৎসকদের আশঙ্কা যে সত্যি তা প্রমাণিত হয় শনিবারও। যে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ২৬ বছরের মেডিক্যাল অফিসার, সেই পুলিশই মূল অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর গোপাল বাদানেকে সাসপেন্ড করে খান্ত দিয়েছে। পুলিশের দাবি অভিযুক্ত বাদানে নিখোঁজ (absconding)। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে নির্যাতিতার উপর মানসিক নির্যাতন চালানো বাড়ির মালিকের ছেলে প্রশান্ত বাঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবি ও নিরাপত্তার দাবিতে আইন প্রণয়নের দাবিতে অনড় চিকিৎসকরা।

–

–

–

–
–


