Saturday, December 13, 2025

বিজেপির ভয়-বিভাজনের রাজনীতিতে করুণ পরিণতির দায় নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? তীব্র আক্রমণ মমতার

Date:

Share post:

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (SIR) প্রক্রিয়া ঘোষণা হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই  আতঙ্কে একের পর এক আত্মহননের খবর সামনে আসছে। এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে তীব্র আক্রমণ শাণালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্যোশাল মিডিয়ায় (Social Media) এক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ”বিজেপির ভয়, বিভাজন এবং ঘৃণার রাজনীতির করুণ পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি।” মমতার কথায়, ”ভোটার তালিকায় সংশোধনের এই  প্রক্রিয়াটি বিজেপির (BJP) ইচ্ছায় জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ফলেই একের পর এক  এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে।” একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন, “একজন বৈধ নাগরিককেও ‘বহিরাগত’ তকমা পরতে দেওয়া হবে না।“

মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ”২৭ অক্টোবর, খড়দহের পানিহাটির ৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। একটি চিরকুট (Note) রেখে যান যেখানে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।” ২৮ অক্টোবর, কোচবিহারের দিনহাটার ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি SIR প্রক্রিয়ার অধীনে হয়রানির ভয়ে নিজের জীবন নেওয়ার চেষ্টা করেন।

আর আজ, পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থেকে ৯৫ বছর বয়সী ক্ষিতীশ মজুমদার-তাঁর মেয়ের সঙ্গে বীরভূমের ইলামবাজারে থাকতেন করতেন- তাঁকে এবং তাঁর পরিবার জমি থেকে উচ্ছেদ কার হতে পারে আতঙ্কে আত্মহত্যা করেন।”

এই ঘটনাগুলিকে “রাজনৈতিকভাবে সৃষ্ট মানসিক ভয় ও আতঙ্কের ফল” বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) প্রশ্ন তোলেন, “এই ট্র্যাজেডিগুলির দায় কে নেবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি দায় স্বীকার করবেন? বিজেপি ও তাদের মিত্ররা কি সাহস দেখাবে এই আতঙ্কের জন্য নিজেদের দায় মেনে নিতে?”

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান লেখেন, “৯৫ বছরের এক বৃদ্ধ, যিনি এই মাটির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁকে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে মরতে হচ্ছে। এ শুধু ট্র্যাজেডি নয় — মানবতার প্রতি এক বিশ্বাসঘাতকতা।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বহু প্রজন্ম ধরে বাংলার মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে এসেছে। আজ তাঁদের নিজের জন্মভূমির অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে। এই নিষ্ঠুরতা কোনও ভাবেই সহ্য করা যায় না।”
আরও খবর: SIR প্রস্তুতি: আজ থেকে প্রশিক্ষণ, আগামিকাল মেগা ভার্চুয়াল বৈঠক অভিষেকের

রাজ্যের মানুষের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, “কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না, কেউ বিশ্বাস হারাবেন না, কেউ চরমপন্থা অবলম্বন করবেন না। মা-মাটি-মানুষ সরকার আপনাদের পাশে আছে। বাংলায় কোনও ভাবেই এনআরসি প্রয়োগ হতে দেওয়া হবে না — না সামনের দরজা দিয়ে, না পিছনের দরজা দিয়ে।” আশ্বাস দিয়ে মমতা লেখেন, “একজন বৈধ নাগরিককেও ‘বহিরাগত’ তকমা পরতে দেওয়া হবে না। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা লড়ব, মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য এবং বিজেপি ও তাদের মিত্রদের কুটিল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার জন্য।”

spot_img

Related articles

কলকাতা পর্ব পিছনে ফেলে নিজামের শহরে মেসি, রাত আটটায় শুরু অনুষ্ঠান

গোট ট্যুর ইন্ডিয়া-র (GOAT Tour India) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এবার কলকাতা পর্ব সেরে হায়দরাবাদে পৌঁছে গেলেন ফুটবলের রাজপুত্র।...

শহরাঞ্চলেও আবাস যোজনায় গতি, দেড় লক্ষ নতুন বাড়ির প্রক্রিয়া শুরু 

রাজ্যের শহরাঞ্চলে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের মাথার উপর পাকা ছাদের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ আরও জোরদার করল সরকার। গ্রামাঞ্চলের...

কথায়-কাজে বিস্তর ফারাক, পরিকল্পনাহীন অনুষ্ঠানে ‘ফ্লপ’ শতদ্রু

কথা রাখলেন না শতদ্রু দত্ত( Satadru dutta), অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের। পেলে-মারাদোনা-মার্টিনেজের পর কলকাতায় নিয়ে এলেন মেসিকেও।...

উত্তাল সল্টলেক, শ্রীভূমিতে মেসি-মূর্তি উন্মোচনের সুষ্ঠু আয়োজন সুজিতের

শনির কলকাতায় দুই বিপরীত দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন মেসি অনুরাগীরা। একদিকে যখন বিশ্বকাপজয়ী তারকার উপস্থিতিতে বেসরকারী আয়োজক সংস্থার অপদার্থতায়...