সামনের বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে শিল্প ও বিনিয়োগের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। শিল্পোন্নয়নের পথে নতুন দিশা দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পৌরহিত্যে ১৮ ডিসেম্বর বসছে রাজ্যের বড় বাণিজ্য ও শিল্প সম্মেলন (Trade and Industrial Conclave)।
রাজ্যস্তরের স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটির চেয়ারম্যান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে শুক্রবার নবান্নে বিভিন্ন দফতরের সচিবরা বৈঠকে বসেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র জানান, মুখ্যমন্ত্রী ১৮ ডিসেম্বর আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকেই শিল্পের পুনরুজ্জীবনে জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। তাঁর উদ্যোগে গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন’ (BGBS)। সেই সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই বহু দেশি-বিদেশি শিল্প সংস্থা বাংলায় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই রিলায়েন্স, জিন্দাল স্টিলের মতো শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলি রাজ্যে বড় মাপের বিনিয়োগ করেছে। পাশাপাশি ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক সংস্থাও বিনিয়োগের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
চলতি বছরের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগের প্রস্তাব দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য গঠন করা হবে একটি ‘সিনার্জি কমিটি’। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র (Amit Mitra)। কমিটিতে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, অর্থসচিব প্রভাতকুমার মিশ্র এবং শিল্পসচিব বন্দনা যাদব।
গত ৮ জুলাই বৈঠকে বসেছিল সিনার্জি কমিটি (Synergy Committee)। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অমিত মিত্র জানিয়েছিলেন, গত তিন মাসে মোট ৩,১৬৫টি শিল্প প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি, রিয়েল এস্টেট, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন ও পরিষেবা ক্ষেত্রের প্রকল্প।
অমিত মিত্রের কথায়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বিনিয়োগ প্রস্তাব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেই সব প্রকল্পকে, যেগুলি রাজ্যে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে, রফতানির সুযোগ বৃদ্ধি করবে এবং রাজ্যের ভৌগোলিক বা প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরের শিল্প সম্মেলনে অংশ নেবে দেশ-বিদেশের বহু শীর্ষ শিল্প সংস্থা ও বিনিয়োগকারী। পুজোর পরে এই সম্মেলনকে ঘিরে রাজ্য সরকারের লক্ষ্য— বাংলাকে নতুন করে শিল্পের মানচিত্রে উজ্জ্বলভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।
–
–
–
–