বেঙ্গালুরুতে পরিযায়ী শ্রমিক বাংলার এক দম্পতির উপর নৃশংস নির্যাতনের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। সুন্দরী বিবি এবং তাঁর স্বামীকে থানায় ডেকে নিয়ে ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে লাঠিচার্জের অভিযোগ। সুন্দরী কাজ করতেন গৃহপরিচারিকা হিসেবে, তাঁর স্বামী স্থানীয় আবর্জনা সংগ্রহকারী গাড়ির চালক। অভিযোগ, চুরির সন্দেহে তাঁদের আটক করে নিগ্রহ চালানো হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর বর্তুর থানায়। সুন্দরী যে বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন, সেই বাড়ির ইঞ্জিনিয়ার দম্পতি তাঁদের বাড়ি থেকে একটি হিরের আংটি নিখোঁজ হওয়ায় সন্দেহ প্রকাশ করেন সুন্দরীর উপর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সুন্দরী ও তাঁর স্বামীকে থানায় আসতে বলা হয়। অভিযোগ, থানায় পৌঁছতেই দু’জনকে আটক করে মারধর শুরু করে পুলিশ। সুন্দরীর দাবি, থানায় উপস্থিত ছিলেন সাত জন পুলিশকর্মী— চার জন পুরুষ এবং তিন জন মহিলা। প্রত্যেকেই তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালান। সুন্দরীর কথায়, “আমি বলছিলাম, আমি নির্দোষ। কিন্তু ওরা বলতে থাকে, আমি বাংলাদেশি। কন্নড় ভাষায় কুকথাও বলছিল।”
ইঞ্জিনিয়ার দম্পতির দাবি, তাঁরা যাচাইয়ের জন্য ঘরের মেঝেতে ১০০ টাকার একটি নোট ফেলে রেখেছিলেন। সুন্দরী নোটটি তুলে নিজের কাছে রেখেছেন— এমন অভিযোগ তুলেই তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও সুন্দরীর দাবি, তিনি ফেরত দেওয়ার জন্যই সেই নোটটি তুলেছিলেন।
থানার ভিতর থেকে দম্পতির আর্তচিৎকার শুনে বাইরে অপেক্ষমাণ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক বিষয়টি স্থানীয় এক সমাজকর্মীকে জানান। তাঁর হস্তক্ষেপেই শেষ পর্যন্ত সুন্দরীকে ছাড়া হয়। পরে তাঁর ‘মেডিকো-লিগ্যাল টেস্ট’ করানো হয়েছে হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়েই আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁদের আইনগত সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। চাইলে তাঁরা বাংলায় ফিরে কাজও পেতে পারেন। আমরা তাঁদের পাশে আছি।” ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও, বেঙ্গালুরুর পরিযায়ী শ্রমিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন – নিউটাউনে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার: স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে অভিযুক্ত বিডিও!
_
_
_
_
_
_
