বিজেপি আদতে বাঙালি বিদ্বেষী, তা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত। সেই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ। এবার আঘাত সরাসরি বাঙালির আত্মসম্মান – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) উপর। কার্যত রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমচন্দ্রের (Bankimchandra Chattopadhyay) মধ্যে বিভাজন করে বাঙালিকে ভাগ করার চক্রান্ত চালাচ্ছে বিজেপি (BJP) ও আরএসএস (RSS)। তার বিরুদ্ধেই এবার বিজেপির বাংলা বিদ্বেষের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সরব দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।

বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিল্পবীদের পাশাপাশি সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের অবদান অবিস্মরণীয়। অথচ সেই বাঙালির গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান বিজেপির। আদতে এটা রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমের মধ্যে বিভাজনের অপচেষ্টা দাবি, গণমঞ্চের সদস্যদের। যেভাবে স্বাধীনতার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমচন্দ্র এক পথে হেঁটে আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন, তার উল্লেখ করেন সৈয়দ তানভির নাসরিন। তিনি ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে ধরেন সেই সব উদাহরণ। পাশাপাশি বক্তাদের মধ্যে শামিম আহমেদ ও বর্ণালি মুখোপাধ্যায় তুলে ধরেন, রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমচন্দ্র এই দুজনই বাঙালির সম্পদ। ভারতের সম্পদ। কখনই আরএসএস বিজেপির পাতা ফাঁদে, বিভাজনের চেষ্টায় তারা সফল হবে না।

এই বিভাজনের চেষ্টার পিছনে বিজেপির বাঙালি বিদ্বেষের ছাপ স্পষ্ট করে দেন বক্তা সিদ্ধব্রত দাস। তিনি বলেন, ভারত সরকার ভাষা খাতে কত টাকা ব্যয় করেছে। হিন্দি ভাষার (Hindi language) জন্য ৪২৬ কোটি টাকা খরচ। বাংলা ভাষার (Bengali language) জন্য ১০ কোটি টাকাও খরচ হয়নি। কোনও বাঙালিকে কী আদৌ বিজেপি বাংলাভাষা লেখা ও পড়ার জন্য ভারতে রাখতে চায়? বাংলা বিদ্বেষী। বাঙালির খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করতে হবে। যে হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে সেখানে কী বাঙালি স্থান পাবে? প্রতিটি বাঙালি মনীষী ভারতকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ থেকে বের করার জন্য কাজ করেছিলেন। আরএসএস ব্রিটিশের চাটুকারিতা করেছিল।

বিজেপি-আরএসএসের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক জনগণমন-এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এবং বন্দে মাতরম-কে অকারণে বিতর্কের কেন্দ্রে টেনে এনে ধর্মীয় বিভাজন তৈরির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশবাঁচাও গণমঞ্চ। সংগঠনের তরফে পূর্ণেন্দু বসু বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দুজনেই বাংলা ও বাঙালির গর্ব। কিন্তু এই দুজনের মধ্যেও এখন বিভাজন করতে চাইছে বিজেপি। বন্দে মাতরম কিংবা জনগণমন নিয়ে কোনও কথা বলার কোনও অধিকার নেই বিজেপি-আরএসএসের। কারণ, জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম থেকে ওরা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ছিল। আর এই দুটি গানই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল স্লোগান ছিল।

আরও পড়ুন : কংগ্রেসকেও সমর্থন করতে পারত RSS: অরাজনৈতিক সাজার চেষ্টা মোহন ভাগবতের!

এদিন বাংলাবিদ্বেষী বিজেপি-আরএসএসের এই গভীর ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা করে ক্ষোভ উগরে দিল দেশবাঁচাও গণমঞ্চ। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ দোলা সেন, সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য, ইতিহাসবিদ সৈয়দ তানভির, বাসুদেব ঘটক, বর্ণালি মুখোপাধ্যায়, সিদ্ধব্রত দাস, দেবাশিস বক্সি, শামিম আহমেদ, সোমা চক্রবর্তী, নাজমুল হক, ভিভান ঘোষ, অমিত কালি, বীরেশ চক্রবর্তী প্রমুখ।

–

–

–

–


