নির্বাচনের আগে এত লাফালাফি। নিজেকে প্রায় কিং মেকারের ভূমিকায় রেখে প্রচার চালিয়েছিলেন প্রাক্তন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) তথা পিকে (PK)। বিহার নির্বাচনে লড়ার (Bihar Assembly Election) জন্য রাজনৈতিক দলও তৈরি করেন। কিন্তু শুক্রবার, বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে পিকে -র জন সূরজ পার্টি। প্রথমবার ভোটে খাতাই খুলতে পারল না তারা। আর এই ফল মনে করিয়ে দেয়, গত বছর মার্চ মাসে একটি বেসরকারি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পিকে-র সম্বন্ধে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisheek Banerjee)। সংক্ষেপে তিনি বলেন, “ওভাররেটেড, ওভারহাইপড (Over rated-Over hyped)।“ আর তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “প্রশান্ত প্রমাণ করলেন রাজনীতিতে তিনি এখনও কিশোর।“

বিহারের ভোটে সাড়া জাগিয়ে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত ধরাশায়ী ভোট কুশলী পিকে-র জন সূরজ পার্টি। বিহারের ২৪৩ আসনের মধ্যে একটিও আসন পেল না প্রশান্ত কিশোরের দল। অথচ অতি আত্মবিশ্বাসে শাসক-বিরোধী কোনও জোটে না গিয়ে একাই ২৩৮ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল জন সূরজ পার্টি। অথচ একসময় নীতিশ কুমারের (Nitish Kumar) JDU-র পদাধিকারী ছিলেন তিনি। নীতীশ বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পরেই দল ছাড়েন পিকে। এবার বেশিরভাগ বুখ ফেরৎ সমীক্ষাতেও পিকে-র দলকে কোনও আসন দেওয়া হয়নি। সেই পূর্বাভাসই মিলে গেল।
আরও খবর: ওটা বিহারের সমীকরণ, বাংলায় জিতবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন: বিজেপিকে উড়িয়ে জবাব তৃণমূলের

এবারের ভোটে বিহারে বদলের ডাক দিয়েছিলেন ভোটকুশলী থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোর। NDA বা মহাগঠবন্ধনের অংশীদার না হয়ে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তাঁর দল জন সূরজ পার্টি। ২০২০ ডিসেম্বরে ভোটকুশলী পিকে (PK) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বাংলায় বিজেপি একশো পেরবে না। সেই পূর্বাভাস মিলে যায়। কিন্তু তার পাঁচ বছর পরে বিহার ভোট নিয়ে রাজনৈতিক নেই প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যদ্বাণী ধুলোয় মিশে গেল। এবার ভোটের আগে তিনি বলেছিলেন, “বিহারে ২৫-এর বেশি আসন পাবে না জেডিইউ। নীতীশ কুমার আর মুখ্যমন্ত্রী হবেন না।” নিজেকে ‘কিং মেকার’-এর ভূমিকায় তুলে ধরতে চেয়েছিলেন পিকে। বার বার দাবি করেছেন, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তাঁর দল ক্ষমতা আসবে। কিন্তু বাস্তবে মুখ থুবড়ে পড়ল জন সূরজ পার্টি। খাতাই খুলতে পারল না তারা। রাজনৈতিক মহলের মতে, যে মুহূর্তে প্রশান্ত কিশোর নিজেকে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন সেই মুহূর্তেই জন তাঁর দলের প্রতি আস্থা কমে গিয়েছিল। গত বছর এক সাক্ষাৎকারে পিকে-র সম্পর্কে তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেককে জিজ্ঞাসা করেন সাংবাদিক। উত্তরে অভিষেকের সংক্ষিপ্ত জবাব ছিল, “প্রশান্ত কিশোর ওভাররেটেড, ওভারহাইপড।“ বিহার নির্বাচনের ফল যেন সেই মন্তব্যই মিলিয়ে দিল। কুণাল বলেন, বিহারে নির্বাচনের নিয়ে বিশ্লেষণ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব করবেন। তবে, প্রশান্ত কিশোরকে কটাক্ষ করে কুণাল বলেন, “প্রশান্ত প্রমাণ করলেন রাজনীতিতে তিনি এখনও কিশোর।“

–

–

–

–

–

–

–

