একদিকে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য ও তার জীববৈচিত্রকে রক্ষা করা। অন্যদিকে সুন্দরবনের দ্বীপে আশ্রয় পাওয়া জনবসতির সামগ্রিক ও বাস্তবিক মানোন্নয়নে তৎপর বাংলার প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে এবার বৈঠক করে রূপায়নের কাজ শুরু হল। বাঁধ রক্ষা থেকে কৃষি জমি রক্ষা, মৎস্যচাষের সমস্যার সমাধান থেকে পর্যটন – রাজ্যের ১২টি দফতরের (state departments) সমন্বয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের (World Bank) টাকায় প্রকল্প রূপায়নের প্রথম ধাপ হিসাবে মঙ্গলবার সল্টলেকের কেএমডিএ অডিটোরিয়ামে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলকে নিয়ে বৈঠকে বসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া (Manas Bhunia)।
বিশ্ব উষ্ণায়নের (global warming) প্রভাবে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি ও একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বিপন্ন সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবার বড়সড় সুসংহত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। মন্ত্রীসভার (cabinet) অনুমোদনের পর বিশ্বব্যাঙ্ক এবং নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) জলসম্পদ বিশেষজ্ঞদের প্রযুক্তিগত সহায়তায় সুন্দরবনের (Sunderban) নদী ও উপকূল রক্ষায় প্রায় চার হাজার একশো কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। । তিনি জানান,
এদিন সেচমন্ত্রী জানান, ‘সাসটেইনেবলি হার্নেসিং ওশান রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোনমি’ বা ‘শোর’ (SHORE) নামের এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দুই চব্বিশ পরগনার এগারোটি ব্লকের ৩৯টি জনবসতি সম্পন্ন দ্বীপে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের ‘ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর আর্থিক সহায়তায় এবং নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।
এই প্রকল্পে মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিলেছে মার্চ মাসেই। প্রকল্পের ৭০ শতাংশ খরচ বিশ্বব্যাঙ্কের। ৩০ শতাংশ রাজ্য সরকারের। ৩৯টি দ্বীপে কাজ করার পাশাপাশি বন দফতর জনবসতিহীন ৪৮টি দ্বীপেও কাজ করবে। এই প্রকল্পে রাজ্যের যে দফতরগুলি যুক্ত থাকছে –
সেচ ও জলপথ দফতর
বন দফতর
মৎস্য দফতর
সুন্দরবন উন্নয়ন বিষয়ক দফতর
প্রাণী সম্পদ দফতর
কৃষি দফতর
জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দফতর
কৃষি বিপণন দফতর
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যান পালন দফতর
পরিবহন দফতর
পর্যটন দফতর
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর
আরও পড়ুন: চওড়া হবে শহরের রাস্তা: যানজট নিয়ন্ত্রণে পুরসভার বড় সিদ্ধান্ত
প্রকল্পে মূলত যে বিষয়গুলিতে জোর দেওয়া হবে – উপকূলের সুরক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তিতে নদী বাঁধ নির্মাণ, পরিবহন পরিকাঠামোর উন্নতি এবং নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য উপযুক্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। তাঁদের জীবিকার জন্য জলবায়ু সহনশীল কৃষি (agriculture) ও মৎস্যপালনের (fishery) ব্যবস্থা, মহিলাদের স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে (SHG) সক্রিয় করা থেকে তাঁদের উৎপাদিত দ্রব্য বাজারে পৌঁছে দিতে পরিবহন ও উৎপাদিত দ্রব্যের সরকারি দফতরের মাধ্যমে বিপণনের পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের।
–
–
–
–
