নাগরিকত্ব থাকবে, না যাবে? আবার কি নতুন করে প্রমাণ করতে হবে যে তাঁরা ভারতীয়? এই দুশ্চিন্তায় যখন গোটা মতুয়া সমাজ উদ্বিগ্ন, তখন মতুয়া (Matua) দলপতিরা বসেছিলেন অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন আন্দোলনে (hunger strike)। কেউ কেউ মঞ্চেই স্যালাইন নিয়েছেন। কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সাধারণ মতুয়ারা যখন এই কঠিন লড়াই চালাচ্ছেন তখন ‘দৃষ্টান্ত’ তৈরি করলেন মতুয়াদের আরেক শ্রেণীর নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur)। ইংল্যান্ডে (England) একের পর এক জায়গায় ঘুরলেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media) সেই ছবি গর্বের সঙ্গে তুলে ধরলেন। সেখানেই স্পষ্ট মতুয়া সমাজের জন্য বাস্তবে কারা চিন্তা করেছেন এবং কারা লোক দেখানো চিন্তা করেছেন।
নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে মতুয়া সমাজ ঠাকুরনগরে (Thakurnagar) বড়মার ঘরের বাইরে নির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসে ছিল। যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর (Mamatabala Thakur)। অনশনের দ্বাদশ দিনে তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) বার্তা নিয়ে মঞ্চে উপস্থিত হন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান তাঁরা। সেই মতো ত্রয়োদশদিনে অনশন প্রত্যাহার করেন মতুয়া দলপতিরা। তাঁদের দাবি থেকে তাঁরা সরে আসেননি। তবে রাজ্য সরকার সর্বতোভাবে তাদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়াতেই তাঁরা আশ্বস্ত হয়ে অনশন প্রত্যাহার করেন।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন রাজ্যে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু করার পর থেকে এই মতুয়াদের (Matua) সব রকম ভাবে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়ে বাস্তবে বিজেপি নেতারা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur) কিভাবে মজা দেখছেন তা প্রমাণিত হল মতুয়াদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। মতুয়াদের জন্য জায়গায় জায়গায় ক্যাম্প করে নাগরিকত্ব দিচ্ছিলেন নাকি শান্তনু ঠাকুর। বারবার তৃণমূলের তরফ থেকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয় সেই ক্যাম্পে গেলে কিভাবে বিপদে পড়বেন মতুয়া সমাজের মানুষেরা। স্বাভাবিকভাবেই মতুয়ারা ক্যাম্পে সাড়া দেওয়া কমিয়ে দেন।
আরও পড়ুন : গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া উচিত: বিরোধীদের বার্তা পিকে-র
পাততাড়ি গুটিয়ে তাই কি শান্তনু ঠাকুর সোজা পাড়ি দেন ইংল্যান্ডে? তবে যেভাবে পরিবার নিয়ে লন্ডনের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তার ছবি তিনি পোস্ট করেন শান্তনু তাতে স্পষ্ট, তিনি মগ্ন রয়েছেন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করতেই। নাগরিকত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা মতুয়ারা তাঁর মনের কোন কোণাতে নেই। শান্তনুর এই আচরণে সরব বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কটাক্ষ করে বলা হয়, বিজেপির নেতা পরিবার নিয়ে ফুর্তি করছেন লন্ডনে, যখন মানুষ অধিকার রক্ষায় ছিল আমরণ অনশনে।
–
–
–
–
–
