রাজ্যে অব্যাহত মৃত্যু মিছিল। নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা এসআইআর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বাংলার মানুষ। পথে ঘাটে নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার নিয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত কোনও মানুষই হতে পারছেন না। আর যাদের ভোটার তালিকা (voter list) সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে তো সমস্যা আরও বেশি। সেভাবেই এবার রাজ্যের দুই জেলায় মৃত্যু হল দুই সহনাগরিকের। পূর্ব মেদিনীপুরের (East Medinipur) কোলাঘাটে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। দুই ক্ষেত্রেই পরিবারের অভিযোগ, নাম সংক্রান্ত সমস্যায় দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে (heart attack) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের (Kolaghat) বছর ৮৩-র কেমিশন এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই কমিশনের (Election Commission) বয়ে আনা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। ২০০২ সালে ভোট দিলেও তাঁর নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (voter list) আসেনি। এমনকি তাঁর ছেলের নাম আসেনি। অথচ ১৯৭১ সাল থেকে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে কেমিশন বিবির। বেশ কয়েকদিন ধরে এই নিয়ে দুশ্চিন্তাতেই তিনি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বলে পরিবারের অভিযোগ।
ভোগপুর পঞ্চায়েতের শেখ পাড়ার মৃতা কেমিশনের ছেলে শেখ নাসিরুদ্দিন জানান, তাঁর মা ভোটার তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তা করছিলেন। বারবার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানান স্থানীয়দের। তাঁদের পরামর্শ নেওয়া শুরু করেন। বৃহস্পতিবার রাতে সেই দুশ্চিন্তাতেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে দাবি ছেলের।
অন্যদিকে মুর্শিদাবাদেও আতঙ্কে হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। ভগবানগোলার (Bhagawangola) বাহাদুরপুরের বাসিন্দা ইরফান খানের। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল তাঁর। সেটি তাঁর সঠিক নামই ছিল। কিন্তু এসআইআর-এর যে ফর্ম (enumeration form) আসে তাতে তাঁর নাম বদলে যায়। তাঁর ডাকনামটি নির্বাচনী ফর্মে চলে আসে। আর তাই নিয়েই আতঙ্কে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন : SIR-প্রতিবাদে পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: মঙ্গলে সভা-মিছিল বনগাঁয়
পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি সুস্থ মানুষ ছিলেন। কিন্তু এসআইআর ফর্ম হাতে পাওয়ার পর থেকে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। ব্লক অফিস, এসডিও অফিস পর্যন্ত তিনি দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন তিনি। তাঁর আর কোনও দুশ্চিন্তাও ছিল না। ভুল নামের কারণে আতঙ্কই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
–
–
–
–
