নির্বাচন কমিশন কতটা কাঁটায় ভরা পথে রাজ্যের বুথ লেভেল আধিকারিকদের এসআইআর প্রক্রিয়া করতে বাধ্য করছে, তার প্রমাণ রাখলেন রাজ্যের দুই বিএলও। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) খাতায় রাজ্যের দুই সেরা বিএলও নদিয়ার (Nadia) ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডল ও বীরভূমের (Birbhum) পূজা ঘোষ। মাত্র ১৭ দিনে নিজেদের বুথের সব কাজ তাঁরা শেষ করেছেন। তরুণ বয়সী দুই বিএলও কাজ শেষ করে জানালেন কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তাঁরা।
নির্দিষ্ট সময়সীমার অনেক আগেই এসআইআর–এর সমস্ত দায়িত্ব নিখুঁতভাবে শেষ করে কমিশনের খাতায় ১০০–তে ১০০ পেলেন এক বিএলও ওয়াহিদ আক্রম মণ্ডল। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট উত্তর–পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের পার্ট নম্বর ১০১–এর দায়িত্বে ছিলেন বড়চুপরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই বিএলও। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কেবল এনুমারেশন ফর্ম বিলিই নন, ডিজিটাইজেশনের পুরো প্রক্রিয়াটাও শেষ করেছেন তিনি। তাঁর দক্ষতা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রমকে সম্মান জানাতে তাঁকে বিশেষভাবে সংবর্ধনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের নির্বাচনী আধিকারিকরা।
ওয়াহিদের দায়িত্বে ছিলেন মোট ৮০৬ জন ভোটার। কমিশনের কারণে ফর্ম পেতেও দেরি হয় এই বিএলও-র। তিনি জানান, দু’দিনে ১০০ করে মোট ২০০ ফর্ম হাতে পেয়েছিলাম। প্রথম দু’দিনেই সব ফর্ম বিলি করে দিই। সময়সীমা মেনে কমিশনের কাজ শেষ করতে যে চূড়ান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে তা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, কোনও দিন কাজ ফেলে রাখতাম না। সময় যাই হোক, তা সেরে নিয়ে তবেই বাড়ি ফিরতাম। অ্যাপ সমস্যায় একাধিকবার তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অ্যাপ ঠিকঠাক চললে সেই সময়েই দ্রুত কাজ সেরে ফেলতাম, জানিয়েছেন ওয়াহিদ।
তবে একজন মহিলা বিএলও (BLO) হিসাবে কাজটা এতটা সহজ ছিল না বীরভূমের পূজা ঘোষের জন্য। কারণ তাঁর বুথে ভোটার সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। তা সত্ত্বেও ১৭ দিনে তিনি ফর্ম বিলি থেকে ডিজিটাইজেশন পর্যন্ত সব কাজ শেষ করে কমিশনের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় কাজ করার একাধিক সমস্যার কথা।
আরও পড়ুন : SIR বন্ধের দাবি, সোমে মিছিল BLO-দের: একশো শতাংশ অধিকার আছে, দাবি তৃণমূলের
লাভপুরের বিপ্রটিকুড়ির ১৬৬ নম্বর বুথের বিএলও ছিলেন পূজা ঘোষ। তাঁর ভোটার সংখ্যা ছিল ১,০১৭ জন। মহিলা হওয়ায় রাতে ফর্ম বিলি বা সংগ্রহের কাজ তাঁকে এড়িয়েই চলতে হত। তাই তিনি জানান, এপর্যন্ত তাঁর ৯৯.৯১ শতাংশ কাজ শেষ। তিনটি ফর্ম তথ্যের সমস্যার কারণে ডিজিটাইজেশন সম্ভব নয়। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি করে ফর্ম ডিজিটাইজেশনের কাজ করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে জানান কমিশনের সার্ভার সমস্যার কথা। সারাদিন ডাউন থাকার পরে রাতে সার্ভারে ভালো কাজ হত জেনেই রাত ২টো বা ৪টে পর্যন্তও কাজ করতেন তিনি।
–
–
–
–