Tuesday, November 25, 2025

ভয় নেই, আমরা থাকতে কেউ তাড়াতে পারবে না: বনগাঁয় আশ্বাস তৃণমূল সুপ্রিমোর, ‘মতুয়া কার্ড’ নিয়ে সতর্কবার্তা

Date:

Share post:

মতুয়া কার্ড (Matua Card) দিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে প্রতারণা! কার্ডেই দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশি বলে। টাকার বিনিময়ে মহাসংঘের তরফ থেকে দেওয়া ফর্ম হাতে ধরে মতুয়াদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee )। মঙ্গলবার, বনগাঁয় এসআইআরের নামে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ের (Matua Community) মানুষকে আশ্বাস দিলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। জানালেন, “নাগরিকত্ব নিয়ে ভয় পাবেন না। নিশ্চিন্তে ঘুমোবেন, আমি আছি আপনাদের পাশে।”

এদিনের মঞ্চ থেকে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো অভিযোগ করেন, “এসআইআর হোক, আপত্তি নেই। কিন্তু ভোটের মুখে হঠাৎ এত তাড়াহুড়ো কেন? ২-৩ বছরের কাজকে ২-৩ মাসে নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এতে প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ গিয়ে ডাম্প লিস্টে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হবে।”

একই সঙ্গে বারবার মতুয়াদের (Matua Community) পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “ভয় পাবেন না, আমরা থাকতে কেউ আপনাদের তাড়াতে পারবে না। কেউ যেন হতাশায় ভুল সিদ্ধান্ত না নেন। নাগরিকত্বের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না”। আশ্বাস দেন মমতা।

মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীণাপানি দেবীর সঙ্গে সুসম্পর্কে কথা উল্লেখ করে তৃণমূল সবানেত্রী বলেন, “বড়মা যখন অসুস্থ হতেন কোথায় ছিলেন। একবার নয়। ৬ বার নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়েছি। বালু আমাকে খবর দিতেন। বালু মানে জ্যোতিপ্রিয়। ঠাকুরবাড়ির উন্নয়ন আমরাই করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় করেছি।” বিজেপি কখনওই মতুয়াদের পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ করেন মমতা। শান্তনু ঠাকুরের নাম না করে তাঁর বিদেশভ্রমণ নিয়েও খোঁচা দেন মমতা। বলেন, এখনে কার্ড করিয়ে এসআইআরের সময় কেউ কেউ বিদেশে ঘুরছেন।

মতুয়া কার্ড প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ১০০ টাকার বিনিময়ে পাওয়া মতুয়া কার্ডে দিয়ে বলা হচ্ছে, এটা দেখালেই ভোটার তালিকায় নাম উঠবে! মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, “ইলেকশন কমিশন কি এই কথা বলেছে? আগে কথাটা লিখতে বলুন। প্রতারণা করছে আপনাদের সঙ্গে।“ রামকৃষ্ণ মিশন-সহ অনেক সংস্থা কার্ড দেয়, কিন্তু কোনও দেশের নাগরিক তা ওরা লেখে না। তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেন, “২০০২ সালের তালিকা ধরে এসআইআর হচ্ছে, কার্ড পাচ্ছেন ২০২৫ সালের নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে। যেখানে আপনাকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে।” এই বিষয় সবাইকে সতর্ক করেন তিনি। সেই শংসাপত্রের ফর্ম পড়ে শোনান মমতা। বলেন, “ফর্মে লেখা আপনি বাংলাদেশি ছিলেন। মানে ২০২৫ সালে যখন সার্টিফিকেট পাচ্ছেন, তখন আপনাকে বাংলাদেশি বলে প্রমাণ করে দিচ্ছে।”

আমিত শাহকে নিশানা করে মমতা বলেন, “এক মুখে দু’রকম কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! একবার বলছেন, ২০২৪-এর আগে যারা এসেছে তাদের তাড়ানো হবে না। আবার কমিশন ২০০২ সালের লিস্ট মানতে বলছে। কোনটা ঠিক?”

অনুপ্রবেশে নিয়েও এদিন সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, কেন্দ্র বরাবরই বাংলাকে দোষ দেয়। অথচ প্রশ্ন, “সীমান্ত কে সামলায়? বিমানবন্দর কার অধীনে? পাসপোর্ট–কাস্টমস কার নিয়ন্ত্রণে? তাহলে বাংলাকে কেন দোষ দেন?” কেন্দ্রের মোদি সরকার বাংলা বিদ্বেষী বলেই বাংলাকে ভাতে মারতে চাইছে বলে অভিযোগ মমতার।
আরও খবরমমতার একের পর এক পত্রাঘাত! তৃণমূল সুপ্রিমোর ঠিকানায় জবাবি চিঠি নির্বাচন কমিশনের

সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী বনগাঁর মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আবার দেখা হবে। চিন্তা করবেন না, আমি আপনাদের পাহারাদার-দিল্লির নেতাদের মতো জমিদার নই।”

spot_img

Related articles

সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা কেন্দ্রের: বাংলাদেশে পুশব্যাক করা সোনালিকে ফেরাতে কড়া নির্দেশ

কেন ফিরিয়ে আনছেন না এদের? আপনাদের কাছে তথ্য যাচাইয়ের পথ তো খোলা আছে। তালে তাঁদের কথা বলতে দিন,...

হতশ্রী বোলিং, গুয়াহাটিতে লজ্জার হারের আতঙ্কে কাঁপছে টিম ইন্ডিয়া

ঠিক এক বছর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছিল ভারতকে। এবার প্রতিপক্ষ পাল্টে দক্ষিণ আফ্রিকা(South africa)।...

মতুয়াগড়ে জননেত্রীর প্রতিবাদ মিছিলে জনস্রোত, রাস্তার দুধারে উপচে পড়া ভিড়

চাঁদপাড়া পাটপট্টি মোড় থেকে ঢাকুরিয়া হাইস্কুল মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল (March)। সামনে জননেত্রী। আর তাঁর পিছনে জনস্রোত। দুধারে...

১০-এর বদলে ৫-এর বৈঠকে সম্মতি কমিশনের! কোথায় স্বচ্ছতা, প্রশ্ন অভিষেকের

তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে দিল্লির নির্বাচন কমিশন। তবে আদতে যে দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের...