মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হল মসজিদের। যেভাবে এক একজন ব্যক্তি মাথায় করে সেই মসজিদ তৈরির জন্য ইট নিয়ে এলেন তা মনে করিয়ে দিচ্ছিল অযোধ্যায় রাম মন্দির (Ayodhya Ram Mandir) প্রতিষ্ঠায় ইট নিয়ে উন্মাদনা। সেখানেও বিদেশ থেকে পাঠানো ইট, সপ্তদশ শতাব্দীর ইট (brick) কাজে লাগানোর চর্চা সেই সময়ে আলোচনার শিরোনামে উঠে এসেছিল। বিজেপির সেই প্যাটার্ন শনিবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ভতরপুর বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের (Humayun Kabir) মসজিদ প্রতিষ্ঠায় দেখা গেল। মন্দিরের নাম তিনি দিয়েছেন বাবরি মসজিদ (Babri Masjid)।
শুধুমাত্র মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেই তিনি থেমে থাকবেন না। শনিবার বেলডাঙায় মঞ্চ থেকে হুমায়ুন ঘোষণা করেন, ওই এলাকায় শুধু মসজিদ হবে না। সেখানে হাসপাতাল হবে। মেডিক্যাল কলেজ হবে। একটি পার্ক যেমন হবে তেমনই হবে একটি হোটেল। এছাড়াও হেলিকপ্টার ওঠা-নামার জন্য় হেলিপ্যাডও (helipad) হবে। গোটা এলাকার এই বিরাট পরিকল্পনা সফল করতে খরচ হবে ৩০০ কোটি টাকা।
সেখানেই প্রশ্ন ওঠে মসজিদে হেলিপ্যাড থাকার গুরুত্ব নিয়ে। তার উত্তরও শনিবার বেলডাঙা থেকেই পাওয়া যায়। হুমায়ুন জানান, এই মসজিদের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ (investment) হয়েছে। সম্ভবত, সেই সব অনুগামীদের জন্য বিলাসবহুল ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে এই মসজিদ এলাকায়। পাশাপাশি বিপুল অনুদানের ছবি শনিবার মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর (stone laying) স্থাপনের মঞ্চ থেকেই দেখতে পাওয়া যায়। জনৈক ব্যবসায়ীর থেকে ৮০ কোটি অনুদানের ঘোষণা করেন হুমায়ুন। আবার মঞ্চেই এক চিকিৎসক এক কোটি টাকা দানও করেন।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো দিনে মুর্শিদাবাদে বাবরি নামের মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে নতুন করে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরির চেষ্টা ভরতপুরের বিধায়কের। গোট দেশ থেকে শনিবারের ঘটনার জেরে যেমন প্রশংসা হয়েছে, তেমন সমালোচনার ঝড়ও উঠেছে। তবে তার আঁচ বেলডাঙায় পৌঁছায়নি। ফলে শান্তিপূর্ণভাবে শনিবারের গোটা অনুষ্ঠান শেষ হয়। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীও।
আরও পড়ুন : রাজনৈতিক মোড়কে মসজিদ প্রতিষ্ঠা! হুমায়ুনের মিথ্যাচারে ধুইয়ে দিলেন কুণাল
সম্প্রীতির মাটি বাংলায় কোনও ধর্মীয় স্থান প্রতিষ্ঠা নিয়ে অশান্তি বিরল। তার ব্যতিক্রম শনিবার বেলডাঙাতেও (Beldanga) হল না। মসজিদ প্রতিষ্ঠায় আসা অনুগামীদের মধ্যে নিজেদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেও অন্য ধর্মের প্রতি কোনও বিরূপ মনোভাব দেখা যায়নি। অন্যদিকে ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলে কোনও উসকানিও ছিল না। ফলে গোটা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রক্রিয়া ছিল শান্তিপূর্ণ।
–
–
–
–
