৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। এবারের মেলা শুধু আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্রবিন্দু নয়, প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যের এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধনের সাক্ষী হতে চলেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে একাধিক অভিনব উদ্যোগ। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে রাতের আকাশে ৪০০ থেকে ৫০০ ড্রোনের মাধ্যমে কপিল মুনির কাহিনির অত্যাধুনিক উপস্থাপনা—যা গঙ্গাসাগর মেলার ইতিহাসে এই প্রথম।
মেলা শুরুর আগে গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মানষ ভূঁইয়া ও বেচারাম মান্না। বিভিন্ন প্রস্তুতি ও নিরাপত্তাব্যবস্থা খতিয়ে দেখে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তাঁরা। অনুমান করা হচ্ছে, এবারের মেলায় ভিড় হবে অন্যান্যবারের তুলনায় বেশি। সেই কারণেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি।
প্রযুক্তির পাশাপাশি ঐতিহ্যকেও নতুন মাত্রায় সাজিয়ে তুলেছে প্রশাসন। গত বছর কালীঘাট, তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর, তারকেশ্বর ও মালদার জহুরা কালী মন্দিরের প্রতিরূপ মেলায় উপস্থাপন করা হয়েছিল। এবারে সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে দীঘার জগন্নাথ দেবের মন্দিরের রেপ্লিকা। এক জায়গায় বাংলার একাধিক দেব-দেবীর আরাধনাস্থল দেখার অভিজ্ঞতা পুণ্যার্থীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকেরা।
মেলার মূল আকর্ষণ হিসেবে কপিল মুনির মন্দিরের পাশে রাতের আকাশে প্রায় পাঁচ মিনিটব্যাপী এক চিত্তাকর্ষক ড্রোন শো করা হবে। আলো-শব্দের সমন্বয়ে কপিল মুনির মন্দির প্রতিষ্ঠা, সগর রাজা ও তাঁর পুত্রদের পৌরাণিক কাহিনি, গঙ্গা দেবীর পৃথিবীতে আগমনের উপাখ্যান—সবই ধরা পড়বে এই প্রদর্শনীতে। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা জানান, গত বছর কুম্ভ মেলা থাকা সত্ত্বেও এক কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে এসেছিলেন। এ বছর কুম্ভ মেলা না থাকায় পুণ্যার্থীর সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণে মুড়িগঙ্গা নদীতে ৩০ কোটি টাকার ড্রেজিং চলছে, যাতে ভেসেল পরিষেবা নির্বিঘ্ন থাকে। পাশাপাশি ভেঙে যাওয়া স্নানের ঘাট মেরামত, বাফার জোন বাড়ানো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, মেলা এলাকাকে আধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এমনভাবে সাজানো হচ্ছে যাতে পুণ্যার্থীদের আধ্যাত্মিক যাত্রা হয় নিরাপদ, স্মরণীয় এবং সম্পূর্ণ নিঃশঙ্ক।
আরও পড়ুন- উদ্বোধনে অরূপ-মলয়-প্রদীপ! মহা-সমারোহে শুরু দুর্গাপুর উৎসব
_
_
_
_
_
_
