Sunday, December 14, 2025

পাকিস্তানের জেলের অন্দরের হাল কী? বন্দির কলমে দুর্বিষহ বর্ণনা

Date:

Share post:

কেমন হাল পাকিস্তানের (Pakistan) জেলের অন্দরের? চরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত বন্দিদের দশা কী হয় সেখানে? তার কথা এতদিন জানা যেত না। একেবারে ব্য়ক্তিগত অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করলেন পঞ্জাবের ভূমিপুত্র মোহনলাল ভাস্কর (Mohanlal Bhaskar)। বইয়ের নাম ‘ম্যায় পাকিস্তান মে ভারত কা জাসুস থা‘। জয় রতন সেটি ‘অ্যান ইন্ডিয়ান স্পাই ইন পাকিস্তান‘ শিরোনামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।

১৯৪২ সালে পঞ্জাবের আবোহরে জন্মগ্রহণ করেন মোহনলাল ভাস্কর। তিনি এমএ-বিএড করে পর শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে সিকিম সরকারের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রিন্সিপাল হন। সেই সঙ্গেই ভারতের (India) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। বইটিতে মোহনলাল লেখেন, ১৯৬৭ সালে তিনি গুপ্তচর হিসেবে পাকিস্তানে ঢোকার জন্য মহম্মদ আসলাম পরিচয় গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এমনকী একজন মুসলিম পুরুষের পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করার জন্য তিনি খৎনাও করান। তাঁর দাবি, চাকরির প্রথম ১৫ মাসে ১৬ বার পাকিস্তানে যান। কিন্তু ১৯৬৮ সালে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, তাঁর কাছে কোনও অস্ত্র, কোনও দলিল, কোনও ‘প্রমাণ‘ ছিল না— তবুও তাঁকে ‘ভারতীয় এজেন্ট‘ ঘোষণা করে অন্ধকারে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেনাবাহিনী ও পুলিশের জেরার সময় কল্পনাতীত ভয়াবহ নির্যাতন করা হয় মোহনলাল ভাস্করকে (Mohanlal Bhaskar)। লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, কোট লখপত-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে জেরা করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল বীভৎস নির্যাতন। অত্যাচারের যে বর্ণনা তিনি লিখেছেন, তা পড়লে মেরুদণ্ড দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। শিকলে হাত পা বাঁধা অবস্থায় উপরে ফেলা হয়েছিল তাঁর চুল, দাড়ি ও ভুরু। তাঁর অনেক সহকর্মী পাগল হয়ে গিয়েছিলেন অথবা নিজেদের জীবন শেষ করে দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের একটি আদালত মোহনলালকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, কিন্তু উচ্চ আদালত পরে তার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর করে। ১৯৭১ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সময় হওয়া সিমলা চুক্তি ভাস্করের মতো বন্দিদের প্রত্যাপর্ণ সহজতর করে। অবশেষে ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ভারতে ফিরে আসেন। ১৯৭৭ সালে তাঁকে ২৮০০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

তবে, অভিযোগ, ফিরে এসে কাজ পেতে বেজায় বেগ পেতে হয়েছিল মোহনলালকে। তিনি তাঁর জেলজীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখেন, ‘ম্যায় পাকিস্তান মে ভারত কা জাসুস থা‘। পরে সেটি জয় রতন ‘অ্যান ইন্ডিয়ান স্পাই ইন পাকিস্তান‘ নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। যা একটি প্রামাণ্য দলিল।

spot_img

Related articles

মহিলা সাংসদদের মধ্যে মন কষাকষি! মেটাতে দিল্লিতে বৈঠক ডাকলেন অভিষেক

সংসদে চলছে শীতকালীন অধিবেশন। বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা এবং বকেয়ার দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন...

আড়াই কোটি টাকা নিয়ে ফেরৎ দিচ্ছেন না শুভেন্দু! বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে চিঠি RSS কর্মীর 

পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির প্রাথমিক শিক্ষকের অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক। পরিবারের সদস্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া এবং...

মুম্বইয়ে মেসি মায়াজাল, সুনীল-সচিনদের সঙ্গে নিয়ে দর্শকদের হৃদয় জিতলেন রাজপুত্র

মুম্বইতে মেসি মায়াজাল। রবিবার সকালেই মুম্বইতে আসেন ফুটবলের রাজপুত্র। হায়দরাবাদের পর মুম্বই, রবিবার সন্ধ্যায় মেসি(Messi) ম্যাজিকে সাক্ষী থাকলো...

‘উৎকর্ষ সম্মান’: টলিউডের নেপথ্যের কারিগরদের স্বীকৃতি ফেডারেশনের

চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন জগতের নেপথ্যের কারিগরদের সম্মান জানাতে ফেডারেশনের তরফে অনুষ্ঠিত হল ‘উৎকর্ষ সম্মান’। সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের (Swaroop...