খুচরো ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড (Traders Welfare Board) গঠন করবে সরকার। বুধবার, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ব্যবসায়ী সম্মেলনের মঞ্চ থেকে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি জানান, ব্যবসায়ীদের সমস্যা দ্রুত মেটাতে এই বোর্ডে থাকবেন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা ও সরকারি আধিকারিকরা। এক জানালা ব্যবস্থায় অভিযোগ নিষ্পত্তি হবে এবং দূরের জেলার ব্যবসায়ীদের আর কলকাতায় ছুটতে হবে না। জেলা স্তরেই সমাধানের ব্যবস্থা থাকবে বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। 
ব্যবসায়ীদের আর্থিক সমস্যার দ্রুত সমাধানে সরকারি বরাতের টাকা পেতে দেরির বিষয়েও উদ্যোগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের একটি পোর্টালের উদ্বোধন করেছেন তিনি। মমতা (Mamata Banerjee) জানান, কাজ শেষ করে নির্ধারিত পোর্টালে (Portal) তথ্য আপলোড করলেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পাওয়া যাবে। এতে ব্যবসায়ী ও উৎপাদকদের আর্থিক চাপ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ লক্ষ অসংগঠিত ব্যবসায়ী রয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় এক কোটি খুচরো ব্যবসায়ী রাজ্যের অর্থনীতিকে সচল রাখছেন। পাড়া-মহল্লার দোকানদারদের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এই খুচরো ব্যবসায়ীরাই বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড। মানুষের হাতে টাকা থাকলেই অর্থনীতি শক্তিশালী হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

MSME ক্ষেত্রের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে ৯৩ লক্ষের বেশি এমএসএমই ইউনিট রয়েছে এবং প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বড় শিল্পে তুলনামূলক ভাবে কম কর্মসংস্থান হলেও এমএসএমই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি মানুষের কাজ হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। লেদার, টেক্সটাইল এবং এমএসএমই উৎপাদনে বাংলা দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বলেও তাঁর দাবি। 

ভাষণে বাংলার ভৌগোলিক অবস্থান ও শিল্প সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক রাজ্য ও দেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকায় বাংলার বাজারের পরিসর বড় বলে জানান তিনি। পাশাপাশি দার্জিলিং চা, নকশি কাঁথা, মালদহের আম, শান্তিনিকেতনের চামড়াশিল্প এবং জয়নগরের মোয়ার মতো জিআই পণ্যের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিল্পের সংখ্যা আরও বহু গুণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
আরও খবর: শহরতলি-মফঃস্বলে যানজটের মোকাবিলার বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা শুরু রাজ্যের

এআই ও প্রযুক্তির প্রসঙ্গেও সতর্ক বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাজ যেন না হারায়, সে বিষয়টি দেখতে হবে। সব কাজ এক দিনে সম্ভব নয়, ধাপে ধাপে এগোতে হবে বলেও জানান তিনি। ভাষণের শেষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার উপর জোর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানসিক শান্তি ছাড়া ব্যবসা এগোয় না।

–

–

–

–

