ইভিএমে নয়, চুরি হচ্ছে ভোটার তালিকায় এবং তা করা হচ্ছে কমিশনের অফিস থেকেই! সেটা ধরতে পেরেছে তৃণমূল। বুধবার, দিল্লিতে (Delhi) জাতীয় নির্বাচন কমিশনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের (Gyanesh Kumar) সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে স্পষ্ট জানালেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিন জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের ফুটেজ (Footage) প্রকাশের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এদিন অভিষেকের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন ডেরেক ও ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নাদিমুল হক, প্রদীপ মজুমদার, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়া, মমতা ঠাকুর, সাকেত গোখেল ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।

হুঙ্কার দিয়ে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, “ভোটার তালিকায় সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে চুরি করা হচ্ছে, তা ধরতে সব দলগুলির প্রতি আমি আহ্বান জানাই। যদি এমন কিছু না হয়ে থাকে, তাহলে লজিক্যাল ডিসক্রেপ্যান্সি তালিকা প্রকাশ করুন। আগের SIR-এ ‘সাসপিশাস লিস্ট’ বলে কিছু ছিল না। আমি জ্ঞানেশ কুমারকে স্পষ্টভাবে বলেছিলাম- আপনারা নির্বাচনী তালিকাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। ওঁকে কি তা হলে অমিত শাহ পাঠিয়েছেন, এই প্রতিষ্ঠানের গরিমা নষ্ট করতে?’

বাংলার এসআইআর সংক্রান্ত মোট ১০ দফা প্রশ্ন নিয়ে এদিন দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে ১০ জনের প্রতিনিধি দল নিয়ে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ক্ষুব্ধ অভিষেক বলেন, “আমরা আড়াই ঘণ্টা ছিলাম, শুধু জ্ঞানেশ কুমার কথা বলেছেন। বাকি কমিশনারদের কি ৩০ সেকেন্ড কথা বলতে দেওয়া যেত না? ক্ষমতা থাকলে আড়াই ঘণ্টার ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করুক জ্ঞানেশ কুমার।“
এদিন জাতীয় নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ দিনের বৈঠকে আমাদের প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে না পেরে মেজাজ হারিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আমার দিকে আঙুল তুলে কথা বলেছেন ৷ আমি তখন পাল্টা বলি, আঙুল নামিয়ে কথা বলুন৷ আমি জনতার দ্বারা নির্বাচিত ৷ মনোনীত নই ৷ সাহস থাকলে এ দিনের বৈঠকের ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করা হোক৷ এরা আঙুল তুলে যা বলবে, তা মানা হবে না৷ আমরা কি বন্ডেড লেবার ? আমরা কি ক্রীতদাস?“

চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বৈঠকের CCTV ফুটেজ প্রকাশ করা হোক। তাহলে সবাই বুঝতে পারবে কী হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ভোট চুরি হচ্ছে ইভিএমে নয়, ভোটার তালিকায়। চুরি না হলে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সির তালিকা প্রকাশ করুক কমিশন” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, কংগ্রেস এই চুরি ধরতে পারেনি বলেই তাদের হারতে হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল কমিশনের এই ভোটার তালিকায় চুরি ধরে ফেলেছে। অভিষেক বলেন, ”মহারাষ্ট্রে, হরিয়ানা, বিহারে, দিল্লিতে ভুলগুলি ধরতে পারেনি কংগ্রেস, আরজেডি, আম আদমি পার্টি। সব জায়গায় বিজেপি ৮৮ শতাংশের স্ট্রাইক রেটে জিতেছে, এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটা হয়েছে কারণ ভোটার তালিকায় চুরি হয়েছে এবং তা করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের দ্বারা।”

–

–

–

–

–


