অশান্তির আঁচ এবার কলকাতার কাছেই৷ নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে একদল বিক্ষোভকারী শিয়ালদহ-বজবজ শাখার আক্রা স্টেশন এবং ট্রেন লাইনে আগুন জ্বালিয়ে ভাঙচুর চালালো৷ বিক্ষোভকারীরা রেল পুলিশকে লক্ষ্য করেও পাথর ছোড়ে, ফলে জখম হয়েছেন রেল পুলিশের দু’জন কর্মী।

ওদিকে রবিবার সকাল থেকেই গণ্ডগোল হয় মালদহ- নিউ জলপাইগুড়ি বিভাগের ভালুকা রোড স্টেশনে। ওখানেও স্টেশনে ভাঙচুর এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে উত্তরবঙ্গগামী অধিকাংশ ট্রেনই বাতিল করেছে পূর্ব রেল।

রেল পুলিশের খবর, রবিরার বেলা সাড়ে 12টা নাগাদ প্রায় 500 বিক্ষোভকারী জড়ো হয় আক্রা স্টেশনের কাছের লেভেল ক্রসিংয়ে। অবরোধ শুরুতে শান্তিপূর্ণ ছিলো৷ একটু পরই বিক্ষোভকারীরা রেল লাইনে টায়ার জ্বালিয়ে দেয়। তখনই শিয়ালদহ থেকে বজবজগামী একটি ট্রেন লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে অবরোধের দরুন দাঁড়িয়ে পড়ে৷ বিক্ষোভকারীরা তখন ট্রেনের চালককে নেমে আসার নির্দেশ দেয়। ট্রেনের চালক নামতে অস্বীকার করলে তাঁকে টেনে নামানো হয়। তারপরই শুরু হয় ট্রেনে ভাঙচুর। চালকের কেবিন, যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করার পর প্রতিটি কামরায় বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালায়। রেল প্রশাসনের দাবি, ট্রেনের সিট-সহ সব জিনিসই কামরা থেকে উপড়ে লাইনে ফেলে দেওয়া হয়। ট্রেন ভাঙচুরের পর বিক্ষোভকারীরা সোজা স্টেশনে উঠে আসে। প্ল্যাটফর্মে থাকা অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন উপড়ে ফেলে দেওয়া হয় ট্রেন লাইনে। বিক্ষোভকারীরা ঢুকে যায় স্টেশন মাস্টারের অফিসে। সেখানকার সমস্ত আসবাবপত্র, অন্য জিনিসপত্র লাইনে ফেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এক রেল কর্মীর বক্তব্য ,‘‘আমরা তখন বুকিং কাউন্টারের কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিই। কিন্তু তাতেও আটকানো যায়নি বিক্ষোভকারীদের। তাঁরা কংক্রিটের বিদ্যুতের খুঁটি দিয়ে দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে। ভেতরে আসবাবপত্র, কম্পিউটার সব ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন। আমরা প্রাণভয়ে শৌচাগারে আশ্রয় নিই৷
বিক্ষোভকারীরা আমাদের শৌচাগারে দেখতে পেয়ে বেরিয়ে আসতে বলেন। তারপরই আগুন লাগিয়ে দেন বুকিং কাউন্টার এবং কন্ট্রোল প্যানেলে”।

এদিকে বিক্ষোভের জেরে দমকলও আটকে পড়ে। ফলে ততক্ষনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় স্টেশনে থাকা নথি, সব যন্ত্রপাতি।

সন্ধ্যা নাগাদ ঘটনাস্থলে যায় বড় পুলিশ বাহিনী। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল খালেক ঘটনাস্থলে এসে বলেন,‘‘যারা ওই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছেন তাঁরা কেউই স্থানীয় নন, সবাই বহিরাগত”৷



