উন্নয়নমূলক কাজে ঢিলেমি বরদাস্ত নয়: অনুব্রত

উন্নয়নমূলক কাজে কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। আর সেটা করলেই দূরে বদলি অথবা কারণ দর্শনানোর নোটিশ ধরানো হবে। সোমবার, বীরভূমের সিউড়িতে জেলার উন্নয়ন বৈঠকে বিডিও থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়কদের এই হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি, যে সব দলীয় নেতৃত্ব উন্নয়নমূলক কাজে সহায়তা করছেন না বা নজর দিচ্ছেন না তাঁদেরকেও ভর্ৎসনা করেন তিনি। পদ কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি।
চতুর্দশ অর্থ কমিশন এবং ১০০দিনের কাজ, বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বীরভূম জেলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সিউড়ির রবীন্দ্রসদনে। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা, জেলা সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল, বিধায়ক অভিজিৎ রায়, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিং-সহ অন্যান্য আধিকারিক, ১৯টি ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ১৬৭ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, নির্মাণ সহায়ক এবং এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট। এই দিনের বৈঠকে সরকারি তথ্য অনুযায়ী ওই ব্লকের মধ্যে মহম্মদ বাজার ব্লক চতুর্দশ অর্থ কমিশন এবং ১০০ দিনের কাজ দুটি ক্ষেত্রেই কাজের নিরিখে এবং টাকা-পয়সা খরচ হিসাবে পিছিয়ে আছে অন্যান্য ব্লকের থেকে। ১৬৭ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত পিছিয়ে আছে উন্নয়নের নিরিখে। এর মধ্যে সবথেকে শোচনীয় অবস্থা চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে নিরিখে সেকেড্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে এবং প্রায় ৫কোটি টাকা তহবিলে জমা রয়েছে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সেই টাকা খরচ করতে না পারলে সমস্ত টাকা ফেরত চলে যাবে। ভারকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়ককে কাজ না হওয়ার কারণ জানতে চান জেলাশাসক। তিনি সঠিক উত্তর দিতে না পারায় তাঁকে শোকজের নির্দেশ দেন।
তালোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে পুজোর আগে বন্যার সময় সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গে রামপুরহাট মহকুমাশাসক শ্বেতা আগারওয়াল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে ঘেরাও হন। মহাকুমা শাসক সেই কাজ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলে সেই সময় ঘেরাও মুক্ত হন। এদিন প্রধানের কাছ থেকে সেই কাজের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চান এবং কাজ কেমন পর্যায় চলছে তা দেখার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এদিকে রামপুরহাট মহকুমা এক বর্তমান বিডিওর কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলাশাসক।
জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, দু-একটি গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়া বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের খুব ভালো কাজ হয়েছে। সঠিকভাবে স্কিম না দেওয়া টেন্ডার প্রক্রিয়া না করা সহ বিভিন্ন কারণে কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজকর্ম একদম পিছিয়ে আছে। কাজের সঠিক মান বজায় রেখে সেই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সরকারি কোনও আধিকারিকের কাজের ঢিলেমি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলাশাসক। অনুব্রত মণ্ডল বলেন, প্রশাসনিক আধিকারিকরা যেভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে আশা করা যায় আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে বকেয়া কাজ শেষ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন-করোনা সতর্কতা: বন্ধ শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক