সুপার সাইক্লোন আমফান যে আয়লা এবং সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ফনী-বুলবুলের মতো ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর তা আগেই জানিয়েছিলেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এই সুপার সাইক্লোন যে এতটা ধ্বংসলীলা তা বোধহয় কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।

আমপানের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বাংলা। বলা ভালো দুই ২৪ পরগনা। বুধবার নবান্ন থেকে বসে অন্তত এমনটাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ঝড়ের পুরোটাই বাংলার উপর দিয়ে গিয়েছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আমফানের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। এ দিন তা চরম আকার ধারণ করে। সারা দিন বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইছিলই। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ সুন্দরবনে আমফান আছড়ে পড়লে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে।

গোটা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলায় কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে কয়েকশো গ্রাম। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। জেলায় যে পরিমাণ ক্ষতি আমফান করেছে তা কয়েকটা আয়লা মিলেও হয়তো করতে পারতো না।

সুন্দরবন উপকূলবর্তী গোসাব-বাসন্তী-ঝড়খালি-কুলতলি-ভাঙর-ক্যানিং থেকে শুরু করে কাকদ্বীপ-নামখানা-বকখালি-সাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। নদী বাঁধ ভেঙে চাষের জমি ভেসে গিয়েছে, গৃহপালিত গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি সব ভেসে গিয়েছে। কয়েক হাজার মাটির ঘর ভেঙে পড়েছে।

শহর অঞ্চলের মধ্যে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বারুইপুর-সোনারপুর-ডায়মন্ড হারবার। ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে সর্বত্র। জল নেই। ইলেক্ট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়েছে।
যে ক্ষতি গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাজুড়ে হয়েছে, তা সম্ভবত অকল্পনীয়। এই ক্ষতিপূরণ আগামী কয়েক বছরের সম্ভব হবে কি না সন্দেহ!
