Tuesday, August 26, 2025

সাধনকে শোকজ সুদীপের, যিনি নিজেই বহিষ্কৃত ছিলেন!

Date:

Share post:

আমফান ইস্যুতে ফিরহাদ হাকিম ও পুরপ্রশাসনের সমালোচনা করায় তৃণমূল শোকজ করেছে মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে।

চিঠি দিয়েছেন উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখন বিতর্ক বেধেছে এই পত্রদাতাকে নিয়ে।
দলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া।

এহেন বিপর্যয়ের সময় সাধনবাবু প্রকাশ্যে মুখ না খুললেই ভালো হত বলে মনে করেন দলের বড় অংশ। এটা তিনি ঠিক করেননি। আবার কোথাও কোনো ভুল ধরা মানেই দলের শত্রুতা নয়, এটাও বাস্তব। কোনো শুভানুধ্যায়ীও কোনো মুহূর্তে ক্ষোভ জানিয়ে ফেলতে পারেন।

কিন্তু তাঁকে সামলে নেওয়া যেত। তার বদলে শোকজ ইত্যাদির মাধ্যমে গুঁতিয়ে গুঁতিয়ে ক্ষত বাড়ানোটা চূড়ান্ত অপরিণত কাজ।

এখানে আবার সমস্যা পত্রদাতা নিয়ে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা সাধনবাবুকে চিঠি দিলে বিতর্ক হত না।
বিতর্ক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দেওয়ায়।
তৃণমূলের বক্তব্য, দলের জেলা সভাপতি হিসেবে সুদীপ চিঠি দেওয়াই স্বাভাবিক।
দলেরই একাংশের বক্তব্য, দল ব্যাপারটা সবসময় ছাপানো বই অনুযায়ী চলে না।

আজ সাধনবাবুকে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য যে সুদীপ শোকজ করছেন, তিনিই দলবিরোধী কাজের জন্য ছবছর সাসপেন্ড ছিলেন। 2004 লোকসভা ভোটে তিনি কংগ্রেসের সমর্থনে জোড়া মোমবাতি চিহ্নে নির্দল লড়ে ভোট কেটে তৃণমূলকে হারান। তাঁর স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় সেসময় ‘আনন্দলোক’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে যে ভাষায় নেত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন, তা বেনজির। সেটি এখন নতুন করে লিফলেট করার কাজ চালাচ্ছে একটি মহল। পরে 2009 সালের লোকসভা নির্বাচনের মুখে সাংবাদিক কুণাল ঘোষের সক্রিয়তায় সুদীপ দলে ফেরেন। নেত্রীকে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে দিল্লিতে দুজনের দেখা করিয়ে সেই অধ্যায় শেষ করেছিলেন কুণাল। নেত্রীর বাড়িতে নৈশভোজের টেবিলে ভুল স্বীকার করে দলে ফিরে উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হন সুদীপ।

এখন সেই সুদীপই শৃঙ্খলার প্রশ্নে সাধনকে শোকজ করায় দলের কর্মীদের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। উত্তর কলকাতায় কেউ ইতিহাস ভোলেননি। যে কারণে এলাকার বিরাট অংশে লোকসভায় সুদীপ পিছিয়ে। তিনি জিতেছেন বিশেষ কয়েকটি পকেট থেকে।
যাঁরা মনে করছেন এই সময়ে সাধন মিডিয়াতে সরব হয়ে অন্যায় করেছেন, তাঁরাও বলছেন যে শোকজের গুরুত্বটাই চলে গেল সুদীপবাবু চিঠি দেওয়ায়। এখন ক্ষমতাসীন দলে সবই চলতে পারে। কিন্তু এতে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় না। উল্টে ক্ষত বেড়ে থাকে।

সুদীপশিবিরের বক্তব্য, জেলা সভাপতি হিসেবে তিনি নির্দেশ পালন করেছেন। এখানে তাঁর আর কিছু করার নেই।

উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে অবশ্য সাধনবাবু কোণঠাসা। অতীন ঘোষ, শশী পাঁজা, পরেশ পাল সকলেই সাধনবাবুর বিরোধী। ফলে আপাতত সাধন পান্ডের তরফে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ছাড়াও কিছু করার নেই। শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে শোকজের উত্তরে নরম দুঃখপ্রকাশের চিঠি দিয়ে জটিলতা কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।

 

spot_img

Related articles

জয়ের ধারা অব্যাহত জর্জের বিরুদ্ধেও, লিগ টেবলে শীর্ষস্থান শক্তিশালী করল ইস্টবেঙ্গল

মঙ্গলবার কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল(Eastbengal) ৪-০ গোলে হারাল জর্জ টেলিগ্রাফকে(George Telegraph)। টানা তিনটি ম্যাচে জয় পাওয়ায় গ্রুপ এ-তে ইস্টবেঙ্গলই...

কৃষ্ণনগরে ছাত্রী খুনে এখনও অধরা অভিযুক্ত, পুলিশের হাতে ঘটনার পরমুহূর্তের ছবি!

কৃষ্ণনগরে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে ছাত্রীকে খুনের ঘটনায় এখনও অধরা অভিযুক্ত প্রেমিক দেশরাজ সিং (Deshraj Singh)। উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর...

ডুবিয়েছে “আগে রাম পরে বাম” থিওরি! বিস্ফোরক পোস্ট বাম জমানার প্রয়াত মন্ত্রীর ভাইপোর, এক সুর সূর্যকান্তরও

তৃণমূলকে ঠেকাতে রাজ্যে রাম-বাম (BJP-Left) হাত মিলিয়েছে। কোথাও বামের সমর্থন করেছে বিজেপিকে (BJP)। কোনও উল্টোটা। এই অভিযোগ শাসকদলের...

কাশ্মীরে বন্যা পরিস্থিতি, দুর্যোগে মৃত ৫ তীর্থযাত্রী, স্থগিত বৈষ্ণোদেবী যাত্রা

ভয়াবহ বিপর্যয় জম্মু ও কাশ্মীরে। উপত্যকার ডোডা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অন্তত নয় জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে।...