উপাচার্য বিতর্ক নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত দূরে ঠেলে করোনা আবহে, আমফান বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার বার্তা দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য় নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ২৪ ঘন্টা আগেও তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। আপাতত সব বিতর্কে জল ঢেলে রাজ্যপাল বলেন, “উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল তা বোতলবন্দি করেছি”। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল শিক্ষামন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর খুব পছন্দের মানুষ। তাঁরা দু’জন ভালো বন্ধু। শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পার্থবাবুর সঙ্গে তাঁর ইতিবাচক কথা হয় বলেও জানান ধনকড়।

এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, “সম্প্রতি শিক্ষাক্ষেত্র বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পর মিটে গিয়েছে। আজ সকলে ওনার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি বিষয়টি দেখার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও আপস নয়, যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য জায়গায় বসানো হোক। মুখ্যমন্ত্রী সব শুনে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। পুরো বিষয়টিকে বোতলবন্দি করেছি। আর কোনও বিতর্ক মাথাচাড়া দেবে না। আমি গত ১৫দিনে তিন বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যবস্থা নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
এরপরই রাজ্যপাল জানান, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রাজ্যে আসার পর থেকে কোভিড-১৯ নিয়ে নিয়ে সমস্ত তথ্য সঠিক সময়ে পাওয়া যাচ্ছে। একইসঙ্গে করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চান বলে জানান ধনকড়।

তাঁর কথায়, “কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই। রাজ্যবাসীর জন্য চিন্তা-ভাবনা করা আমার সাংবিধানিক কর্তব্য। করোনা সঙ্কটের মধ্যেই রাজ্যকে আরও কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে আমফান। এই পরিস্থিতিতে সবাই রাজ্যের তহবিলে সাহায্য করুন। এই সঙ্কটে রাজ্য-কেন্দ্রকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাজ্যের স্বার্থে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে অনুঘটকের ভূমিকা নেব”।
পাশাপাশি, লকডাউন শিথিল হওয়ার পর নদিয়া-উত্তর ২৪ পরগনা-দক্ষিণ ২৪ পরগণার মানুষ কীভাবে কর্মস্থলে পৌঁছবেন তা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। বাস পরিবহণ যাতে ঠিকঠাক হয়, সে ব্যাপারে নজর দেওয়ার কথা বলেছি। বাস মালিকদেরও অনুরোধ করছি সাধারণ মানুষের সমস্যার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখার জন্য। দ্রুত পথে বাস নামানোর অনুরোধ করছি”।

সবশেষে রাজ্যপাল জানান, আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। রাজ্যপাল প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপনের কথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে রাজ্যবাসীকে ওইদিন গাছ লাগানোর অনুরোধ করেন ধনকড়।
