Saturday, November 15, 2025

গালওয়ান দখলে কেন মরিয়া চিন, নেপথ্যে কী শুধুই ভীতি ?

Date:

Share post:

১৯৬২ সালের ঘটনা আজও তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় ভারতীয় সেনা জওয়ানদের । সেবার ভীতু মতো পিঠে ছুরি মেরেছিল চিন। আচমকাই ভারতীয় ভুখণ্ডে হামলা চালিয়েছিল চিনা লাল ফৌজ। ওই যুদ্ধে ভারতীয় সেনার সপ্তম ব্রিগেডের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জন দালভি। লাল ফৌজের হাতে বন্দি হয়েছিলেন দালভি।
লড়াই শেষে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে হিমালয়ান ব্লন্ডার– দ্য সার্টেইন রেইজেন টু দ্য সাইনো-ইন্ডিয়ান ওয়ার অব ১৯৬২ শীর্ষক একটি বই লেখেন তিনি। প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বইটিকে ঘিরে দেখা দেয় তুমুল বিতর্ক। তারপরই সেটিকে নিষিদ্ধ করে দেয় ভারত সরকার। কারণ, ওই বইয়ে দালভি বলেছিলেন, পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনার অভাবেই হেরেছে ভারত।
সেদিনের সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে চিনের সঙ্গে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটারের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিকাঠামো নির্মাণে মন দেয় ভারত। মনমোহন থেকে মোদি সরকার, প্রত্যেকেই দেশের সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দিয়েছে। ফলে ওই অঞ্চলে ভারতের শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে অশনি সংকেত দেখছে চিন। লাল ফৌজের দখলে থাকা লাদাখের ‘আকসাই চিন’ উদ্ধারের দাবি ভারতে জোরদার হয়েছে। ফলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গালওয়ান উপত্যকার দখল নিতে মরিয়া চিন।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, দুর্গম এলাকার ভারতীয় পোস্ট দউলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) পর্যন্ত ২৫৫ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা আগেই তৈরি করে ফেলেছিল ভারত। গত বছর সেই সড়কের উপর একটি সেতুর উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই রাস্তারই শাখাপ্রশাখা তৈরি করতে শুরু করেছিল বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। সঙ্গে শিয়ক নদীর উপর আরও বেশ কয়েকটি সেতু। তাতেই ক্ষুব্ধ হয় চিন। লেহ থেকে দরবুক, তার পর শিয়ক নদী ধরে ডিবিও পর্যন্ত সব রাস্তা পরিকল্পনামাফিক সমাপ্ত হলে গলওয়ান উপত্যকায় আমরা অনেকটা সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যাবো। এটা কিছুতেই মানতে পারেনি বেইজিং।
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশে দ্রুত সেনা ও ট্যাংক বাহিনী মোতায়েন করতে আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর বগিবিল ও ধলা-শদিয়া সেতু নির্মাণ করেছে ভারত। ফলে ওই ফ্রন্টেও অবস্থান মজবুত হয়েছে ভারতীয় বাহিনীর। সবই করা হচ্ছে, সহজে সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার জন্য। যা চিনের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। গালওয়ানের সংঘর্ষ তারই ফল।
এরই পাশাপাশি, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের উষ্ণ সম্পর্কও তাদের চিন্তা বাড়িয়েছে । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চিনের অভ্যন্তরে করোনাভাইরাস নিয়ে বাড়তে থাকা বিক্ষোভ। যা থেকে নজর ঘোরাতে সীমান্তে জেনেশুনেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

spot_img

Related articles

রবীন্দ্র সরোবরের ছয় ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি: সম্পূর্ণ আইনি পথে কর্পোরেশন

প্রায় পাঁচ দশক পর রাবীন্দ্র সরোবর চত্বরে অবস্থিত ছ’টি ক্লাবের সঙ্গে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক ভাড়ার চুক্তি করল কলকাতা...

বিহারে কমিশনের কারচুপি, তোপ অখিলেশের: ঘুরিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ ওমরের

বিহারে এসআইআর প্রয়োগ করে ভোটারদের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস-আরজেডির (RJD) মহাজোটের এটাই ছিল বিহার নির্বাচনের মূল...

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী কে: ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট JD(U)-এর!

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ২৪৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৮৯ আসনে জয়ী। নীতীশ কুমারের জেডিইউ জিতেছে ৮৫ টি আসন।...

জাদুসম্রাটের বাড়িতে বিয়ের আসর! বিজ্ঞাপন দেখে পাত্র পছন্দ মৌবনীর

জিনা বন্দ্যোপাধ্যায় জনে জনে বার্তা রুটি গেল ক্রমে, বিয়ে করছেন মৌবনী শীতের মরশুমে! মেয়ের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন পিসি সরকার, সেখান থেকেই পাত্র...