Friday, November 14, 2025

ছি:-লজ্জা! ৬ ঘন্টা মাটিতে পরে থেকে মৃত্যু বৃদ্ধার, অমানবিক কলকাতার কথা জানলে শিউরে উঠবেন

Date:

Share post:

ফের অমানবিকতার ছবি দেখল কলকাতা। এ লজ্জা আমার- আপনার- সবার। আমরা যারা নিজেকে শিক্ষিত বলে বড়াই করি, তারা যে এমন নির্মম আচরণ করতে পারেন তার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল কলকাতা। শ্যামপুকুরে 6 ঘন্টা যন্ত্রণায় মাটিতে পড়ে গোঙালেন এক বৃদ্ধা। অথচ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো না কেউই। না ।এগিয়ে আসেনি তার পরিজনরা, এগিয়ে আসেননি প্রতিবেশীরাও। দু’একজন যারা এসেছিলেন তাদের যতটা না ছিল দায়িত্ববোধ, তার থেকে অনেক বেশি ছিল কৌতূহল। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দায় সেরেছেন তারা।
খবর পেয়ে এলেন না চিকিৎসকও, এমন দাবি পরিবারের। সকাল থেকে প্রায় বিকেল পর্যন্ত কেউ বৃদ্ধাকে তুললেন না। প্রায় ৬ ঘন্টা পর খবর পেয়ে শেষে উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুর থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটল শ্যামপুকুরের বৃন্দাবন পাল লেনে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম ছায়া চট্টোপাধ্যায় (৭০)। বৃন্দাবন পাল লেনের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। তাঁর স্বামী অনুপ চট্টোপাধ্যায় আগেই মারা গিয়েছেন। পাশের ঘরেই তাঁর দেওর পরিবার নিয়ে থাকেন। কয়েকদিন আগে পড়ে গিয়ে তিনি পায়ে আঘাত পান। সেখান থেকে তাঁর পায়ে ঘা হয়ে যায়। তার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিলেন বৃদ্ধা।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বউদির সঙ্গে দেওরের পরিবারের সম্পর্ক খুব একটা ভাল ছিল না। তাই পাশের ঘরে পরিজন থাকা সত্ত্বেও একাকী ছিলেন তিনি। সকাল সাড়ে নটা নাগাদ তাঁর অবস্থা দেখেও দেওর নিজে গিয়ে বউদিকে ছোঁননি। একে একে কয়েকজন প্রতিবেশী আসেন। ঘরের বাইরে থেকে উঁকি মেরে দেখে চলে যান। জানা গিয়েছে, তখনও বৃদ্ধা বেঁচে ছিলেন। কিন্তু করোনার আতঙ্কে কেউ তাঁকে তোলার সাহসটুকু দেখাননি।
পুলিশের দাবি, ওই অবস্থায় যদি বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অথবা পুলিশকে খবর দেওয়াও হত, তাহলে বৃদ্ধা হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন। কিন্তু এভাবে সকাল থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত পড়ে ছিলেন বৃদ্ধা। এতটাই মর্মান্তিক যে তাঁর মুখে সামান্য জল দেওয়ার জন্যও কেউ এগিয়ে আসেননি।
পুলিশ বা পুরসভাকে তা জানাননি কেন, সেই উত্তর দিতে পারেননি পরিজন অথবা অন্য প্রতিবেশীরাও।
পুলিশ যখন তাকে উদ্ধার করে ততক্ষণে সমস্ত ঘৃণা, লজ্জা, অমানবিকতা, নিষ্ঠুরতাকে বিদায় জানিয়ে ইহলোক ত্যাগ করেছেন তিনি। সঙ্গে রেখে গিয়েছেন একরাশ প্রশ্ন। এ কোন পথে এগোচ্ছে সমাজ? এ কোন আলেয়ার দিকে দৌড়াচ্ছি আমরা । ধিক শত ধিক ।

spot_img

Related articles

সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানি! গ্রেফতার RG Kar আন্দোলনের ‘বিপ্লবী’ ডাক্তার

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতে সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে। ঘটনায় গ্রেফতার বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের...

আন্দুল রোডে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! ভস্মীভূত দুই স্পঞ্জ কারখানা 

রাতের হাওড়ায় ভয়াবহ আগুনে কার্যত ছারখার হয়ে গেল আন্দুল রোডের পাশে হাঁসখালি পোল এলাকার দুটি স্পঞ্জ তৈরির কারখানা।...

সোনারপুরে শুরু হচ্ছে প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে নিউমোনিয়া ও ফ্লু টিকাকরণ কর্মসূচি

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বাড়ছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই রোগ অনেক সময় প্রাণঘাতী...

প্রকাশিত হল আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

প্রকাশিত হল আগামী বছরের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি। কাউন্সিলের তরফে এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি...