কোথায় পৌঁছিয়েছি আমরা! শুধুমাত্র করোনায় মৃত্যু হয়েছে বলে পরিজনকে প্রিয়জনের মুখটুকুও শেষবারের মতো দেখতে দেওয়া হচ্ছে না। অবশ্য কড়কড়ে ৫১হাজার টাকা দিলেই মিলবে প্রিয়জনের মুখ দেখার সুযোগ! সুযোগ বুঝে এই পরিমণ্ডলেও টাকা চাইতে লজ্জা করছে না এক শ্রেণীর মানুষের ।
আমরা নিজেরাই নিজেদের বেআব্রু করে সমাজের কাছে নিজের আসল চেহারাটা তুলে ধরছি। ব্যাতিক্রম নয় শ্মশানের কর্মীরাও। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়া শহরের শিবপুর শ্মশান ঘাটে। বেশ কিছুক্ষণ দর কষাকষির পর আড়াই হাজার টাকার বিনিময়ে মুখ দেখেছেন তারা।
জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরের শিবপুরের বাসিন্দা বছর ৬৮’র প্রবীণ বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্যই তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । নিয়মমাফিক সেখানে তাঁর কোভিড টেস্টও হয়। সেখানেই ধরা পড়ে যে তিনি করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু উপসর্গ না থাকায় তাঁকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক। এমনকি হাসপাতালে তাঁকে না রেখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গত শুক্রবার আচমকাই তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। শুরু হয় তীব্র শ্বাসকষ্ট। তখন জেলা স্বাস্থ্যদফতরে যোগাযোগ করা হলে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয় বাড়িতে। রোগীকে ভর্তি করা হয় টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় সঞ্জীবন হাসপাতালে। রবিবার দুপুরে সেখানেই মারা যান তিনি।
এরপরই শুরু হয় আসল নাটক। মৃতের পরিবার দেহ দাহ করার জন্য শিবপুর শ্মশানে যেতেই সমস্যা শুরু হয়। অভিযোগ, বৃদ্ধকে শেষবার দেখানোর বিনিময়ে ৫১ হাজার টাকা দাবি করেন শ্মশানকর্মীরা। শেষে আড়াই হাজার টাকায় বৃদ্ধকে দেখাতে রাজি হন তারা। শ্মশান থেকে বাড়ি ফিরে গোটা বিষয়টি তাঁরা জানিয়ে দেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। এমনকি এই নিয়ে তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন তাঁরা। তার জেরে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন শ্মশানকর্মীরা।


