বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কি বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা? সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, সার্বিকভাবে সারা পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার বছরের হিমশীতল পার্মাফ্রস্ট গলে যাচ্ছে। পার্মাফ্রস্ট হল পৃথিবীর উপরের বরফের স্তরের তলায় থাকা পাকাপাকি ভাবে জমাট বাঁধা মাটি। এর ফলে সেই বরফ-মাটির নীচে দীর্ঘ বছরের চাপা পড়া ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস আবার বাইরে বেরিয়ে আসছে।

বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর বেশিরভাগ পার্মাফ্রস্ট রয়েছে উত্তর গোলার্ধের আর্কটিক অঞ্চলে। সেই অঞ্চলে যখন কোনও প্রাণী মারা যায়, তারা বরফ গলে নীচে প্রবেশ করে, পার্মাফ্রস্টের বরফ-মাটির মধ্যে জমাট বেঁধে থেকে যায়। ফলে তাদের শরীরে জমা থাকা জীবাণুও সেই সঙ্গেই মিশে যায় পার্মাফ্রস্টে। দ্রুত গতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হাজার বছর ধরে জমাট বেঁধে থাকা সেই বরফ-মাটি গলছে। ফলে তার মধ্যে থাকা প্রাণীগুলির দেহের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াও বাইরে বেরিয়ে আসছে।
এই বিষয়টি সর্বপ্রথম নজর আসে, পশুদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার পরে। সংক্রামক অ্যানথ্রাক্স রোগের জন্য দায়ী ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া। ৭৫ বছর আগে থেকে জমে থাকা সেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণেই ওই অঞ্চলের বহু প্রাণী আক্রান্ত হয় এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করা মানুষেরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই এলাকা খুব বেশি জনঘনবসতিপূর্ণ না হওয়ার কারণে বড় মহামারির হাত থেকে রক্ষা পায় রাশিয়া।
পার্মাফ্রস্ট বরফ আর মাটি মেশা এমন একটা স্তর, যাতে বিভিন্ন ঘাতক জীবাণু দীর্ঘ সময় ধরে অক্ষত অবস্থায় থাকতে পারে। হয়তো এমন কোনও জীবাণু, যা এখনও মানুষের ইতিহাসে দেখাই দেয়নি, তাও বেরিয়ে আসতে পারে এই বরফের ভেতর থেকে।
