তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠক: আলোচনায় “এক ব্যক্তি এক পদ” থেকে পুরভোট, দলবদলু ইস্যু

বিপুল জনাদেশ নিয়ে তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (CM) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই করোনা (Corona) ও ইয়াস (YAAS) মোকাবিলায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়ে তৃণমূল (TMC) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। একইসঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য-রাজ্যপাল ও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তারই মাঝে দলীয় স্তরে বড়সড় সাংগঠনিক বৈঠকের ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল, ৫ জুন তৃণমূল ভবনে সাংগঠনিক বৈঠক ডেকেছেন তিনি। শনিবারের বারবেলায় এই বৈঠকে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের লোকসভার সাংসদ, রাজ্যসভার সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী ও পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পুর প্রশাসক ও জেলা সভাপতিদের। তবে ঠিক কী কী ইস্যুতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে, তা অবশ্য দলের তরফে খোলসা করা হয়নি। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই বৈঠকে থাকবেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজ্যের প্রায় ১১০টি পুরসভার ভোট বাকি রয়েছে। মহামারির জন্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। করোনা
সংক্রমণের গতি নিম্নগামী হলেই পুর নির্বাচ সেরে ফেলতে চায় রাজ্য সরকার। তাই ৫ জুনের বৈঠকে সেই নির্বাচন প্রসঙ্গেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন দলনেত্রী। সেই কারণেই পুরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসকদের বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে, চুক্তি শেষ হয়ে গেলেও ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে ধরে রাখতে আগ্রহী তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। শনিবারের বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরও। সেক্ষেত্রে আগামিদিনে দল পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মতামত পিকের থেকে চাইতে পারেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

শনিবার তৃণমূল ভবনের বৈঠকে উঠে আসতে পারে যে বিষয়গুলি–

(১) একেবারে কর্পোরেট মোড়কে দলের সংগঠনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার “এক ব্যক্তি এক পদ” ফর্মুলায় হাঁটতে পারে তৃণমূল। যদি এমনটা হয় সেক্ষেত্রে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে সেখানে আনা হতে পারে নতুন মুখদের।

(২) দলের বেশ ছাত্র, যুব, মহিলা, সংখ্যালঘু, SC, ST, OBC শাখা সংগঠনগুলির কিছু মুখ পরিবর্তন করা হতে পারে।

(৩) এবার বিধানসভা নির্বাচনে দলের বিরাট জয়ের পিছনে যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ভূমিকা ছিল। সেই দিকটিকে নজরে রেখে দলনেত্রী দল পরিচালনার ক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব আরও বাড়াতে পারেন।

(৪) জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বিধানসভার উপনির্বাচনে ৬ আসনে প্রার্থীদের নাম শনিবারই ঘোষণা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(৫) কলকাতা, বিধাননগর, হাওড়া কর্পোরেশন-সহ রাজ্যের প্রায় ১১০টি পুরসভার ভোট বাকি রয়েছে। মহামারির জন্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। প্রশাসক বসিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের গতি নিম্নগামী হলেই পুর নির্বাচ সেরে ফেলতে চায় রাজ্য সরকার। তাই ৫ জুনের বৈঠকে সেই নির্বাচন প্রসঙ্গেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন দলনেত্রী। সম্ভবত সেই কারণেই পুরসভার চেয়ারম্যান ও প্রশাসকদের বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

(৬) আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং-সহ বেশকিছু জেলায় দলের খারাপ পারফরম্যান্স নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হতে পারে বৈঠকে। ষড়যন্ত্র করে বিধানসভা নির্বাচনে যারা দলবিরোধী কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ পারে তৃণমূল।

(৭) অন্যদিকে, বিজেপি থেকে ফের যেসব নেতা-নেত্রীরা তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরে আসতে চাইছেন সে বিষয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযয়ের মনোভাব কোর কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর তা মূল বৈঠকে জানানো হতে পারে।

Advt

Previous article২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ হাইকোর্টের, পাল্টা ইস্তফা মধ্যপ্রদেশের ৩০০০ ডাক্তারের
Next articleরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়, অভিযোগ দায়ের লালবাজারে