২০১৯ থেকে ২০২১, চাপ থাকলেও টানা ২ বছর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সেইভাবে রদবদল ঘটাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ সূত্রের খবর, আগামী ৭দিনের মধ্যেই নিজের মন্ত্রিসভায় বড়সড় বদল আনছেন মোদি৷

দিল্লির খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী এই ইস্যুতে আলোচনা করছেন শরিক দলগুলির সঙ্গে৷ মোদি সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে গত দু’বছরে বিজেপির দুই পুরনো শরিক, শিবসেনা ও শিরোমণি অকালি দল NDA ছেড়েছে। আর এক শরিক LJP-র প্রধান রামবিলাস পাসোয়ান মারা গিয়েছেন। তাঁদের হাতে থাকা মন্ত্রক বিজেপির মন্ত্রীদের মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বহু মন্ত্রীর হাতেই একাধিক মন্ত্রক রয়েছে। ওদিকে আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে পাঞ্জাব-হিমাচল-উত্তরাখণ্ড-গুজরাতের মতো রাজ্যে ভোট রয়েছে৷ এই সব রাজ্যের নির্বাচনের কথাও মাথায় রেখেছেন মোদি- শাহ৷ উত্তরপ্রদেশে বিজেপির শরিক আপনা দল, নিষাদ পার্টি অমিত শাহর কাছে নিজেদের ভাগ দাবি করেছে। বিহারে নীতীশ কুমারের JDU-র সঙ্গে বিজেপির জোট সরকার চললেও, কেন্দ্রে মোদি সরকারের মন্ত্রিসভায় JDU-র কোনও মন্ত্রী নেই। JDU-র সভাপতি আরসিপি সিংহ দাবি তুলেছেন, তাঁদেরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা চাই। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ার আশায় বসে রয়েছেন। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরে বিজেপির সামনে আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের ভোট বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। ফলে উত্তরপ্রদেশেও যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মন্ত্রিসভা ও সংগঠনে রদবদল হবে। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া জিতিন প্রসাদ বড় দায়িত্ব পেতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে৷ ফলে, এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রায় নিশ্চিত৷ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে পিছিয়ে যাওয়া রদবদল আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যেই হতে পারে বলে দিল্লি সূত্রের খবর৷
আরও পড়ুন-‘কৃষক বাঁচাও, গণতন্ত্র বাঁচাও’ দিবস, ২৬ জুন সব রাজ্যের রাজভবনের সামনে ধর্না কর্মসূচি বিক্ষোভকারীদের

এদিকে, এই রদবদল নিয়ে বঙ্গ-রাজনীতিতেও কৌতূহল চরমে৷ ভোটে হেরে যাওয়ার পরে বঙ্গ বিজেপিতে ভাঙন রুখতে এবং দলের নেতা- কর্মীদের মনোবল বাড়াতে নতুন কাউকে মন্ত্রিসভায় আনা হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছে৷ ওদিকে, বিজেপির তিন সাংসদ নিশীথ প্রামানিক, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিং-রা গত তিনদিন ধরে দিল্লিতেই বসে রয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এদের মধ্যে কাউকে প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে ৷ বঙ্গ-বিজেপির সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ আর বেশিদিন নেই৷ জল্পনা চলছে, তাঁকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করে সভাপতি পদে নতুন কাউকে আনার৷ বাংলা থেকে মন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে আছেন ডাঃ সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়ও৷ ধারনা করা হচ্ছে এদের মধ্য থেকেই ২ জন এবার কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন৷ রাজ্য যে ভাবে ‘ঘর ওয়াপসি’ শুরু হয়েছে, তা ঠেকাতে এবার একাধিক মন্ত্রীও করা হতে পারে৷ বাংলা থেকে আপাতত বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরি কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হিসাবে কাজ করছেন৷ এই দুই প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কাউকে ক্যাবিনেটে আনা হবে কি না, তা নিয়েও চর্চা চলছে।

বঙ্গ-বিজেপি তাই এখন তাকিয়ে আছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের দিকে৷ কতজন এবং কার কার ভাগ্যে এবার শিঁকে ছেড়ে, লক্ষ্য সেদিকেই৷
