এক আধটা নয়, ছ’ছটি শিকারি কুকুর দিন রাত পাহারা দিচ্ছে। সদা জাগ্রত তারা। রয়েছে চার জন নিরাপত্তা রক্ষী।
নিশ্চয়ই ভাবছেন কোনও ভিআইপির নিরাপত্তা? আসলে ছয় সারমেয় এবং চার নিরাপত্তা রক্ষীর মোতায়েন করা হযেছে আমের পাহারা দিতে। যে কোনও রত্ন বা গুপ্তধনের থেকেও নাকি এই আম অনেক বেশি দামি।

ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর। সেখানকার আমের বাগানে রয়েছে দুটি দুর্লভ প্রজাতির আমগাছ। এবং এটি বিশ্বের দ্বিতীয় মূল্যবান আম। এক কেজি আমের দাম ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। আর আমের পোশাকি নাম মিয়াজাকি। নাম শুনেই অনুমান করতে পারছেন যে
এটি একটি জাপানি আম। জব্বলপুের এক দম্পতি নিজেদের বাগানে এই আমের দুটি গাছ লাগিয়েছিলেন। তারই ফল পাচ্ছেন তাঁরা।

মিয়াজাকি আমের রং টকটকে লাল। একে সূর্যের ডিম নামেও ডাকা হয়। ভোরবেলার টকটকে লাল সূর্যের মতোই দেখতে এই দুর্লভ প্রজাতির আমটি। জব্বলপুরে কৃষক দম্পতি সংকল্প পরিহার এবং রানি পরিহার নিজেদের বাগানে এই আমের চারা রোপণ করেন। চারাটি তাঁরা পেয়েছিলেন চেন্নাইয়ের এক ব্যক্তির কাছ থেকে। তখন অবশ্য তাঁরা এই দামের মূল্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। অভ্যাসবশত আর পাঁচটা আম গাছের মতো এটিও রোপণ করে যত্ন আত্তি নিতে শুরু করে দেন তাঁরা। এমনকি তাঁরা নাকি মিয়াজাকি নামটা পর্যন্ত শোনেননি। যত্ন নিতে নিতে গাছ বড় হয়। গাছে ফল ধরে। কিন্তু এ কেমন আম? আর পাঁচটা আমের মতো তো এটি হলদে, কমলা, সবুজ নয়? এ আমের রঙ তো পুরো লাল। তাহলে কি বিষাক্ত কিছু? খোঁজ নিতে শুরু করেন পরিহার দম্পতি।

আন্তর্জাতিক বাজারে এই আমের মূল্য নাকি কেজি প্রতি ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। গত বছর অন্তত এই দামেই বিক্রি হয়েছে এই আম।

আর এসব খবর চাউর হতেই শুরু হয় সর্বনাশ। আম চুরি করতে ময়দানে নেমে পড়ে ‘ডাকাতে’র দল। অগত্যা সবে ধন নীলমণি এই লাল আমকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই পরিবারও। দুটি আম এবং একটি গাছের ডাল ‘ডাকাতি’ হওয়ার পর গাছের নিরাপত্তা জোরদার করেন তাঁরা। মোতায়েন করা হয় ৬টি শিকারি কুকুর এবং ৪ জন কড়া নিরাপত্তারক্ষী।
কিন্তু এই মিয়াজাকি বা দামিনী আমের এত দাম কেন? কী আছে এতে? বিশেষজ্ঞরা অবশ্য তেমন কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেন নি।

জানা গিয়েছে, আফগানিস্তানের নূরজাহানের পর এই মিয়াজাকি বা দামিনী হল বিশ্বের দ্বিতীয় মূল্যবান আম। স্বাদে অপূর্ব। যদিও এর কোনও বিশেষ গুণ আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
