পাক্কা চিটিংবাজ। চিটিংবাজি (Cheating) ও জালিয়াতিকে (Fraud) কীভাবে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হয় সেই বিদ্যায় সে ছিল “ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট”! কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মহলে শোনা যাচ্ছে, ভুয়ো IAS দেবাঞ্জন দেব খুব মেধাবী ছিল। IAS পাস করতে পারেনি বলেই হতাশা থেকে ভুয়ো IAS হয়েছে। বাস্তবে কিন্তু আদপে তা নয়। একেবারেই সাধারণ মানের ছাত্র ছিল দেবাঞ্জন। যে মেধায় অন্তত IAS হওয়া খুব কঠিন। তার মাধ্যমিক (Madhyamik) ও উচ্চ মাধ্যমিকের (HS) রেজাল্ট সেই কথাই বলছে।

ছাত্রাবস্থায় পড়াশোনায় কেমন ছিল দেবাঞ্জন?
ভুয়ো IAS-এর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট কেমন ছিল? কতটা মেধাবী দেবাঞ্জন? খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, স্কুল জীবনে টাকি বয়েজ স্কুলে পড়তো দেবাঞ্জন। সেখান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, এই দুই বড় পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। যেখানে স্পষ্ট, একেবারেই উচ্চমেধার পড়ুয়া ছিল না দেবাঞ্জন। একেবারেই সাদামাটা ফলাফল করতো সে।

তবে দেবাঞ্জনকে নিয়ে তার পরিবার সর্বদাই স্বপ্ন দেখত, ছেলে বড় হয়ে IAS বা ওই পর্যায়ের কোনও বড় অফিসার হবেন। সেই জন্যই একবার UPSC পরীক্ষাতেও বসে সে। কিন্তু, প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতেও পাস করতে পারেনি। যদিও শুরুতে তার ব্যর্থতার বিষয়টি পরিবারের কাছে গোপন করেছিল সে। এবং বাড়িতে সকলের কাছে নিজেকে সে প্রতিষ্ঠিত IAS বলেই পরিচয় দিত। আবার এমনটাও নয়, কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের আগে তার বাবা-মা ছেলের কুকীর্তি জানতেন না। কিন্তু সকলে চুপ ছিলেন।

*এক নজরে দেবাঞ্জনের অ্যাক্যাডেমিক কোয়ালিফিকেশন*

টাকি বয়েজ় স্কুল থেকে ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল দেবাঞ্জন দেব। মোট ৮ টি পেপার মিলিয়ে ৫৬১ নম্বর পেয়েছিল সে। প্রাপ্ত হার ছিল ৭০ শতাংশ। বাংলায় দুই পেপারে ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৩১। ইংরেজিতে ৭৬। অঙ্কে ৭০। ভৌত বিজ্ঞানে ৮৭। জীবন বিজ্ঞানে ৬৭। ইতিহাসে ৫৫ এবং ভূগোলে ৭৫ নম্বর পেয়েছিল সে। অর্থাৎ, একেবারেই মধ্যমেধার একজন ছাত্র ছিল সে।

দেবাঞ্জনের উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিকের তুলনায় আরও সাধারণ ফলাফল উচ্চ মাধ্যমিকে। পরিবেশ বিজ্ঞান মিলিয়ে মোট ৭ টি পেপারের মধ্যে সেরা ৫ টি বিষয় মিলিয়ে দেবাঞ্জন পেয়েছিল মাত্র ২৮৪। শতকরা প্রাপ্ত হার ছিল ৫৬.৮ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন নম্বর ছিল রসায়নে (৪৪)। আবার সেরা ৫ টি বিষয়ের মধ্যে দেবাঞ্জন বাংলায় পায় ৫২, ইংরেজিতে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৩, পদার্থবিদ্যায় ৫৪, অঙ্কে ৫০ এবং জীববিদ্যায় ৬৫।
