Saturday, August 23, 2025

নাড্ডার “পেপ টক”, তবে ভোট বিপর্যয়ের দায় রাজ্য নেতাদের উপরই চাপালেন অরবিন্দ মেনন

Date:

Share post:

বাংলার ভোটে (West Bengal Assembly Election) বিপর্যয় নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। এবার ভোটে বিজেপির (BJP) হারের দায় পুরোপুরি রাজ্য নেতৃত্বের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন “বহিরাগত” নেতারা। ২০০-এর ঢক্কানিনাদ থেকে ৭৭-এ থেমে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘাড় থেকে কার্যত দায় ঝেড়ে ফেললেন রাজ্যে সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন (Arvind Menon)। তাঁর এমন পর্যবেক্ষণে ক্ষুব্ধ রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ।

রাজ্য বিজেপির একটা অংশের দাবি, ২৯৪ কেন্দ্রে প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে ভোটের আগে দল ভাঙানো, নব্য বিজেপির হাতে ভোটের দায়িত্ব তুলে দেওয়া কিংবা নির্বাচনী
রণকৌশলও, সমস্ত সিদ্ধান্তই নিয়েছেন বহিরাগত তথা কেন্দ্রীয় নেতারা। ডেইলি প্যাসেঞ্জার হয়ে প্রচারের সামনের সারিতেও ছিলেন ”হিন্দিভাষী”রা। অথচ হারের দায় বঙ্গ বিজেপি নেতাদের? শুধু তাই নয়, রাজ্য নেতাদের মধ্যে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছেন অরবিন্দ মেনন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় নেতারা এভাবে দায় ঝেড়ে ফেলায় ক্ষোভ গোপন উগরে দিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। কারণ, ভোটের পুরো দায়িত্বে ছিলেন দিল্লির নেতারাই। সমস্ত সিদ্ধান্তই তাঁদের নেওয়া। জেলায় জেলায়, জোনে জোনে পর্যবেক্ষক ছিলেন ভিন রাজ্যের নেতারা। ভোটের অনেক আগে থেকে আইটি সেলের প্রধান অমিত মলব্যকে এনে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। দল ভালো ফল করলে কৃতিত্ব তাঁরাই নিতেন। আর বিপর্যয়ের দায় এখন রাজ্য নেতাদের!

অন্যদিকে, বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বার করতে বিধানসভা ধরে ধরে ফলাফলের ময়নাতদন্ত চাইলেন বিরোধী দলনেতা তথা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির বৈঠকে নাকি এমনই প্রস্তাব রেখেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুভেন্দু নাকি জানিয়েছেন, যে যত বড় নেতাই হোন না কেন, তাঁকে নিজের এলাকায় সময় দিতে হবে। নিজের বুথে যেন দল জয় পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে একটি একদিনের প্রশিক্ষণ শিবির করতে চান তিনি।

আরও পড়ুন:নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত নাসিরুদ্দিন, একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দিলীপ কুমারও

রাজ্যের প্রধান ও বিধানসভায় একমাত্র বিরোধী দল হিসেবে আগামিদিনে বিজেপির আন্দোলনের রূপ রেখা বাদলে দিতে জেলাস্তরের স্থানীয় নেতৃত্ব ও কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করার দিকে রাজ্য নেতৃত্বকে বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (J P Nadda)। হারের হতাশা ভুলে কর্মীদের আত্মবিশ্বাস অটুট রাখতে পরিসংখ্যান তুলে ধরে ”পেপ টক” দেন নাড্ডা। তিনি বলেন, ”বাংলায় বিজেপি অনেকটা পথ পেরিয়েছে। মনে রাখা দরকার, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে সর্বসাকুল্যে ২টি আসন জিতেছিল বিজেপি। সাংসদ হয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং আলুওয়ালিয়া। ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম আমরা। ২০১৬ সালে বিধানসভায় মাত্র ৩টি আসন পেয়েছিলাম। ভোটের হার ১০.১৬ শতাংশ। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে ৪০.৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। জিতেছি ৪২টির মধ্যে ১৮ আসন। প্রায় ২ কোটি ৩০ লক্ষ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এবার বিধানসভায় ভোটের হার ৩৮.১ শতাংশ এবং প্রায় ২ কোটি ২৭ লক্ষ ভোট। ৩ থেকে ৭৭-এ পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। এটাও কম বড় প্রাপ্তি নয়। বাংলায় তৃণমূলের বিপক্ষে এখন শুধুই বিজেপি (BJP)। তিন দশক শাসন চালিয়ে সিপিএম (CPM) শেষ। আড়াই দশক রাজত্ব চালিয়ে কংগ্রেস (Congress) আর নেই। এত স্বল্প সময়ে লড়াই করে এখানে এসেছি। আমার পূর্ণ বিশ্বাস, আগামী ৫ বছরে বিজেপি আরও বড় লক্ষ্যে ঝাঁপাবে। পরেরবার ক্ষমতায় আসব। লক্ষ্য পূরণ করব।”

 

spot_img

Related articles

আমেরিকায় চিঠি–পার্সেল পাঠানোয় বিধিনিষেধ, সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের 

ভারত–মার্কিন শুল্কযুদ্ধের জেরে এবার বড়সড় প্রভাব পড়ল ডাক পরিষেবায়। আমেরিকায় চিঠি ও পার্সেল পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বিধিনিষেধ জারি করল...

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...