‘শুভেন্দু তৃণমূলের এজেন্ট’, বিজেপির অন্দরে বেলাগাম বিবাদ

বিরোধী দলনেতার নির্দেশে বিধানসভার সব কমিটি থেকে সরে গেলেন বিজেপি বিধায়করা। এই ‘ত্যাগ’-এর কারণ, মুকুল রায়কে কেন PAC-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে৷ স্রেফ ইস্তফা’ই নয়, দল বেঁধে মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে নালিশও জানিয়ে এসেছেন তাঁরা৷ যদিও এ বিষয়ে শুধু নালিশ শোনা ছাড়া রাজ্যপালের কিছুই করনীয় নেই৷

আর এই ইস্যুতে গেরুয়া- অন্দরে কার্যত শুম্ভ- নিশুম্ভের লড়াইয়ের আবহ তৈরি হয়েছে এদিন সন্ধ্যা থেকেই৷ শুধু একে অপরের বিরুদ্ধে সামান্য তোপ দাগা’র মধ্যে মতবিরোধ সীমাবদ্ধ থাকেনি৷ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘তৃণমূলের এজেন্ট’ পর্যন্ত বলেছেন বঙ্গ-বিজেপির একাধিক নেতা ৷

বিধানসভার কমিটি থেকে বিজেপি বিধায়কদের ইস্তফা দেওয়ার একক সিদ্ধান্ত বিরোধী দলনেতার৷ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে বিজেপির অভ্যন্তরে৷ একাধিক শীর্ষনেতার বক্তব্য, “এই সিদ্ধান্ত বিরোধী দলনেতার একার৷ ইস্তফা দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত অপরিনত৷ এভাবে তৃণমূলের বিরোধিতা করে বিজেপি নিজের ক্ষতি করলো৷ লাভ হলো শাসক দলের৷ শুভেন্দু অধিকারী পরোক্ষে তৃণমূলের সুবিধা করে দিলেন৷ বিজেপির অন্দরে তৃণমূলের ‘সিক্রেট এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করছেন বিরোধী দলনেতা৷”

গুরুতর এই অভিযোগ তোলার কারণ ব্যাখ্যা করে ওই নেতারা বলেছেন, “এই প্রথমবার আমরা বিধানসভার এতগুলি কমিটির প্রধান হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলো৷ এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে অনেকটাই চাপে থাকতো শাসক দল৷ কিন্তু ইস্তফা দিয়ে বিজেপি আসলে তৃণমূলেরই সুবিধা করে দিলো৷ তৃণমূলের পাতা ফাঁদে নির্বোধের মতো ধরা দিলো বিজেপির পরিষদীয় দল৷ শাসক দল এমনটাই চাইছিলো৷”

এখানেই শেষ নয়৷ পদ্ম-শিবিরের এক শীর্ষ নেতার সাফ কথা, ” ইস্তফা দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে হলে পদত্যাগ করতে পারতেন বিরোধী দলনেতা স্বয়ং৷ তাতে চাপ হয়তো জোরালো হতো৷ অথচ শুভেন্দু নিজের পদ বুক দিয়ে আগলে বলি দিলেন দলের বিধায়কদের৷ কোনও নেতা যদি এমন নগ্নভাবে নিজের স্বার্থ রক্ষা করে, তাহলে দলের বিধায়কদের মনোবল ভাঙ্গতে বাধ্য”৷ বিজেপির এই বলেছেন, “এবার হয়তো স্পিকারের হাতে-পায়ে ধরে ইস্তফাপত্র গ্রহণ না করতে আর্জি জানাবেন শুভেন্দু ৷ এইভাবে ইস্তফা দেওয়ায় দলের লাভ কতখানি হলো? পুরো লাভ তুলে নিলো শাসক দল৷ নজরদারি করার কেউ আর রইলো না৷”

বঙ্গ-বিজেপির এই নেতাদের বক্তব্য, “মুকুল রায়ের PAC-র চেয়ারম্যান হওয়া আটকাতে পারলেন না শুভেন্দু, তার উপর দলের বাকি বিধায়কদেরও কমিটি থেকে ইস্তফা দেওয়ালেন৷ অথচ নিজে পদ ধরে রাখলেন? এ কেমন নেতা ? তৃণমূলের স্বার্থ কেন রক্ষা করলেন বিরোধী দলনেতা, তার জবাব চাওয়া হবে”৷

আরও পড়ুন- “PAC চেয়ারম্যান ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি-রাজ্যপাল যেখানে খুশি যাক!” শুভেন্দুকে কড়া জবাব স্পিকারের