বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা:

ঢাকার কেরানিগঞ্জে চলচ্চিত্রের নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করল পুলিশ। তদন্তকারীরা বলছেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেলই শিমুকে খুন করেন। রবিবার সকালে এই খুন করা হ্য়েছে। এরপর নোবেল তাঁর বন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদের সাহায্যে মৃতদেহ দুই খণ্ড করে বস্তায় ভরে কেরানিগঞ্জে নিয়ে ফেলেন।
জানা গিয়েছে, শিমুর মৃতদেহ যে বস্তায় রাখা হয়েছিল, সেই বস্তা সেলাই করা সুতার মাধ্যমে সন্দেহের আওতায় আসেন তাঁর স্বামী নোবেল। একই রকমের সুতা নোবেলের গাড়িতে পাওয়া যায়। এ ছাড়া গাড়িটি ধুয়ে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর গন্ধও মেলে। এরপর মেলে যোগসূত্র।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নোবেল স্বীকার করেন, রবিবার সকাল ৭টা-৮টার দিকে তিনি শিমুকে গলা টিপে খুন করেন। এরপর বন্ধু ফরহাদকে মোবাইল ফোনে কল করে ডেকে নেন। পরে ফরহাদ ও নোবেল পরিকল্পনা করে বাইরে থেকে বস্তা এনে শিমুর লাশ লম্বালম্বিভাবে দুটি পাটের বস্তায় ভরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর চালাকি করে বাড়ির দারোয়ানকে খাবার আনতে বাইরে পাঠিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনের আসনে শিমুর লাশ নিয়ে বেরিয়ে যান।
জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ গুম করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বসিলা ব্রিজ হয়ে কেরানিগঞ্জ মডেল থানার হযরতপুর ইউনিয়নের ওই এলাকায় সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর মৃতদেহটি ফেলে রেখে চলে যান।

শিমুর বোন ফাতেমা নিসা জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার সদর থানার সিআইপাড়া এলাকায়। তাঁর বাবার নাম নূর ইসলাম। তাঁর বোন শিমু ১৮ বছর আগে ফরিদপুরের কমলপুর গ্রামের নোবেলকে বিয়ে করেন। প্রেম করে তাঁদের বিয়ে হয়। তাঁদের ১৬ বছরের একটি মেয়ে ও সাত বছরের একটি ছেলে আছে।
স্বজন ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে কাজী হায়াতের ‘বর্তমান’ সিনেমায় দ্বিতীয় নায়িকা হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন শিমু। এরপর ২০০৪ সাল পর্যন্ত ২৫টি সিনেমায় তিনি দ্বিতীয় নায়িকা ছিলেন। গেল দুই বছর ধরে এফডিসিতে যাতায়াত ছিল শিমুর। শিল্পী সমিতি থেকে ভোটাধিকার হারানো ১৮৪ জন শিল্পীর মধ্যে ছিলেন তিনি। ভোটাধিকার রক্ষার বিভিন্ন আন্দোলনে তাঁকে সক্রিয়ভাবে দেখা গেছে।













