মণীশ কীর্তনিয়া, দার্জিলিং: বারাবরই পাহাড় তাঁর প্রিয় জায়গা। রাজনৈতিক কর্মসূচিই হোক বা প্রশাসনিক বৈঠক- পাহাড়ে গেলে হেঁটে ঘুরে বেড়াতেই ভালবাসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ((Mamata Bandopadhyay)। মঙ্গলবার, জিটিএ-র (GTA) শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেও, তার ব্যতিক্রম ঘটল না। সমতলের ধাঁচে পাহাড়ে নয়া ক্যাফে হাউসের (Cafe House) উদ্বোধন থেকে শুরু করে নিজের হাতে ফুচকার আলু মেখে ছোটদের খাওয়ানো পর্যন্ত- নানা মেজাজে পাওয়া গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

১১ টায় শুরু হয় জিটিএর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। স্বল্প সময়ের এই অনুষ্ঠানের পরে মঞ্চ থেকে নেমে মহাকাল মন্দিরের পিছন দিকে ক্যাফে হাউসের উদ্বোধনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Arup Biswas), অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকে। দার্জিলিঙে এরকম একটি ক্যাফে হাউস তৈরি করার জন্য সত্যম রায়চৌধুরীর (Satyam Ray Chowdhuri) প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “অনেকেই মুখে অনেক কিছু করার কথা বলে কিন্তু সত্যম কাজটা করে দেখিয়েছে।” দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) এই ক্যাফে হাউসে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখতে কফি পানের অনুভূতিই আলাদা। এখানে এসে ছুঁয়ে দেখা যাবে বাংলাকে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে গান ধরেন সাহেব। “আলোকের এই ঝর্ণাধারায়…” গানে গলা মেলান স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সেখানে যোগ দেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। কলকাতার কফি হাউস, মান্না দের গান আর নস্টালজিয়া সম্পর্কে অনীতকে বোঝান মুখ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠান শেষে মমতা হাঁটেন আরও প্রায় পাঁচ-ছ কিলোমিটার। পাহাড়েই এক জায়গায় সেলফ হেল্প গ্রুপের মহিলারা বিভিন্ন খাবার তৈরি করেন। গতবার সেখানে গিয়ে নিজের হাতে মোমো তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার মাখলেন ফুচকার আলু। টিপ দিলেন কীভাবে সেই পুরের স্বাদ আরও বাড়ানো যায়। নিজের হাতে ফুচকায় পুর ভরে টকজল দিয়ে তা খাওয়ালেন সেখানে উপস্থিত ছোটদের। আপ্লুত পাহাড়বাসী।

এবার পাহাড়ে প্রচুর বাংলাদেশের নাগরিক বেড়াতে গিয়েছেন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে তার সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এঁরা আমাদের অতিথি। এদের যেন কোনও রকম সমস্যা না হয়। পাহাড়ে ঘুরে বরাবরই জনসংযোগে জোর দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও হেঁটে জনগণের কাছে গিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। আর নিজেও সময় পেলেই পৌঁছে যান আমজনতার মাঝে। কখনও রাস্তার দোকানে দাঁড়িয়ে তৈরি করেন চা। কখনও খুন্তি নাড়েন আলুর তরকারিতে। আর দার্জিলিং-এ মোমো বানানো থেকে ফুচকা তৈরি- অন্য মমতাকে দেখে অভিভূত পাহাড়বাসী।
